‘সব সময় বকা-ঝকা করায় ম্যানেজার স্যারকে খুন করেছি’

Slider বাংলার আদালত


মিরসরাই (চট্টগ্রাম): মিরসরাইয়ে পোলট্রি শিল্পপ্রতিষ্ঠান সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিডেটের ব্যবস্থাপক (দুর্গাপুর হ্যাচারী) মোহাম্মদ আতাউল হাকিম হত্যার ঘটনায় ওই ফ্যাক্টরির কর্মচারী এছব আলীকে (৩০) গ্রেফতার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। গত ২১ জানুয়ারি রাতে রংপুরের হাজিরহাট জগদ্বীশপুর এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার চট্টগ্রামের ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আতাউল হাকিমকে হত্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সব সময় বকা-ঝকা করায় ম্যানেজার স্যারকে খুন করেছি।’

গ্রেফতারকৃত এছব আলী ওই এলাকার মো: কাদের আলীর ছেলে।

এছব আলী জবানবন্দিতে বলেন, ‘প্রায় সময় আমাকে বকা-ঝকা করতেন ম্যানেজার আতাউল হাকিম। তাই তার উপর আমার ক্ষোভ ছিল। ঘটনার দিন গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে আমি কাজ শেষে ময়লা পরিস্কারের জন্য ম্যানেজারের কাছে সাবান ও হুইল পাউডার চাইলে ওই দিনও তিনি আমাকে বকা-ঝকা করেন। এতে ম্যানেজারের ওপর আমার রাগ আরো বেড়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যার পর ম্যানেজার তুষের গোডাউনের পাশে রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় পেছন দিক থেকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করি। সাথে সাথে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর পুনরায় মাথায় ও হাতে আরো দু’বার আঘাত করেছি। পরে টেনে দেয়ালের পাশে রেখে চলে আসি।’

এ ব্যাপারে জোরারগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো: হেলাল উদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘সিপির ম্যানেজার আতাউল হাকিম হত্যার ঘটনার পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার ৯ দিনের মধ্যে রংপুর জেলার জগদ্বীশপুর এলাকায় তার খালার বাড়ি থেকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ফ্যাক্টরির কর্মচারী এছব আলীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি। ঘটনার পর তিনি ফ্যাক্টরি থেকে পালিয়ে যান। এরপর সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে অবস্থান করেছেন। এরপর রংপুরে অবস্থান করেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২২ জানুয়ারি আদালতে নিয়ে যাই। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি একাই হত্যার সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন। তারপরও আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি না আমরা বিভিন্ন কললিস্ট চেক করে দেখছি।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সিপি বাংলাদেশ লিমিটেড মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুরে অবস্থিত হ্যাচারীর ব্যবস্থাপক আতাউল হাকিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মিরসরাই সদরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ১৫ জানুয়ারি আতাউল হাকিমের ভাই আরিফুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *