মোইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

সিলেট


সিলেট প্রতিনিধি :: গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জের পশ্চিম বাজার এলাকার মোল্লাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়ানো ট্রাকের পেছনে মোইক্রোবাসের (নোহা) ধাক্কায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন চারজন। নিহত চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন কুরআনে হাফেজ।

ভয়ঙ্কর এ হ্রদয়বিদারক দুর্ঘটনায় কোরআনে হাফিজ মারজানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। নিহত হাফিজ মারজান রাহি (২৫) সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার তালবাড়ি পুর্বকোনা গ্রামের মুক্তার হোসেনের ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত অপর তিনজনের পরিচায় বুধবার দিনেই শনাক্ত হয়। তারা হলেন- বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের বারইগ্রামের মৃত কুনু মিয়ার ছেলে রাজন আহমদ (২৭), একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে ও মাইকোবাস চালক সুনাম আহমদ (২৬) এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের রফিপুর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার শিশু পুত্র হাসান আহমদ (৮)।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে- বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে গোলাপগঞ্জের হেতিমগঞ্জ পশ্চিম বাজার এলাকার মোল্লাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়ানো পন্যবাহী একটি ট্রাকের পেছনে যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস (নোহা) ধাক্কা দিলে নোহার সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ৩জন যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরো ৩জন যাত্রী। মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে পাশ্ববর্তী কলোনিতে গিয়ে পড়ে। এতে মারা যায় শিশু হাসান।

ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক আলাউদ্দিন মনির বলেন, বুধবার ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। গিয়ে দেখাযায়, নোহা গাড়িটি জ্বলে ভস্মিভূত হয়ে গেছে এবং ট্রাকের পেছনদিকে আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিস আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভায়। তবে ফায়ার সার্ভিসের দল যাওয়ার আগেই তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় এক শিশু।

এদিকে, বিয়ানীবাজারের নিহত সুনাম ও রাজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। গতকাল বাদ আছর নামাজের জানাজা শেষে নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে সুনাম ও রাজনকে দাফন করা হয়েছে।

নিহত মাইক্রোবাস চালক সুনাম আহমদের পিতা আব্দুল জলিল জানান, সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সুনাম মাইক্রোবাস চালাত। আমার ছোট ছেলে নাইম আহমদও সিএনজি (সিএনজি চালিত অটোরিকশা) চালায়। আমার দুই ছেলের রোজগারে আমার পরিবার চলত। সবেমাত্র একটু একটু করে সচ্ছলতা ফিরে আসছিল সংসারে। শুরু হয়েছিল সংসারে উন্নতির পালা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল আমার ছেলে।

তিনি জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মাহিন আহমদ নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যান সুনাম, রাজন ও মাহিনের পরিবারের সদস্যরা। বুধবার ভোর ৫টার দিকে মাহিনকে নিয়ে বাড়ি ফিরার পথে এই ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুত্ব আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন মাহিন আহমদ (১৭) নামের এক যুবক। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *