মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো: বাবুনগরী

Slider বাংলার মুখোমুখি

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম): হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, আল্লামা শফীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। এই মামলা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ঠ করা এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে হয়রানি করার হীন ষড়যন্ত্র বৈ কিছু নয়। অনতিবিলম্বে দায়েরকৃত এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামদের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। বুধবার সকালে সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসাস্থ হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো। স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে দেশবাসীকে জানিয়েছিলেন। অনেক আগ থেকে আল্লামা শফীর শারীরিক অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে, বেশ কয়েকবারই তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।
সুতরাং, আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ তুলে যারা মামলা করেছে, তারা একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী। তারা দেশের আলেম সমাজ ও সচেতন তৌহিদি জনতার কাছে প্রত্যাখ্যাত। মামলায় তথাকথিত হত্যার যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো অতিরঞ্জন ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমরা মনে করি। সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছায় ওনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। তাকে হত্যা করা হয়েছিল এমন কোনো মেডিকেল রিপোর্টও দালালগোষ্ঠীরা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি যে, আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. এর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র মূলকভাবে নির্জলা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। হযরতের ইন্তেকালের তিন মাস পর ঐ কুচক্রি মহল তাঁর মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। দায়েরকৃত মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে এবং বিবরণে যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা কেউ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা সম্পূর্ণ মিথ্যা ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমূলক। তিনি বলেন, আল্লামা আহমদ শফীর জীবদ্দশাতেও তাকে জিম্মি করে কায়েমী স্বার্থ হাসিল করতে দেখা গিয়েছিল। তারাই ওনাকে জিম্মি করে একের পর এক দুর্নীতি ও অনাচার চালিয়ে ওনার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলো। আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে জিম্মি করে হাটহাজারী মাদরাসায় ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করে রেখেছিল। সেখানে নানা অনিয়ম এবং ছাত্রদের ওপর অব্যাহত হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলা হয়েছিল। এছাড়া বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষককে মাদরাসা থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করে বের করে দেয়া হয়েছিল, যা ছিল অত্যন্ত অবমাননাকর। তাদের অনিয়ম ও ক্রমাগত হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে হাটহাজারি মাদরাসার ছাত্ররা জুলুমতন্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিরেন আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, নোমান ফয়জী, তাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ শোয়াইব, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ, মুফতী জসিম উদ্দীন, লোকমান হাকিমসহ আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *