ফাইল যেন আটকে না থাকে

Slider জাতীয়

PM_bg_247665435
ঢাকা: কাজের দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, সরকারের লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নেওয়া। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারের হৃদপিণ্ড। এ মন্ত্রণালয়ের অনেক দায়িত্ব। কিন্তু দেখা যায়, এখানে এসে কোনো একটা ফাইল পড়ে থাকে। কোনো প্রস্তাব আসলে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়।

তিনি বলেন, ফাইল যাতে আটকে না থাকে, কোনো প্রস্তাব আসলে তার বিষয়ে দ্রুত যেন সিদ্ধান্ত হয়, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলবো মন্ত্রণালয়কে।

প্রধানমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজের দীর্ঘসূত্রিতার কথাও এ সময় তুলে ধরেন।

এ সময় দেশের উন্নয়নে সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টিমওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, সিনিয়র সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সরকারি নিয়োগ প্রকিয়াকে আরো সহজ করার ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে আমাদের শিক্ষক, চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে। আমাদের পুলিশ নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া সহজ করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে আলাদা আলাদা উইং করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারি কর্মচারীদের যোগ্য ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রশিক্ষণের মান ও সময় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বলতে গেলে প্রশিক্ষণ হয় না। প্রশিক্ষণের প্রতি অনীহাও দেখা যায়।

তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষণের প্রতি আগ্রহী হতে হবে। প্রশিক্ষণ আরো বাড়াতে হবে, সময়টাও বাড়াতে হবে। মাত্র ৪ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসলে কিছু হয় না।

ঢাকাকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় ১৭টি জেলা। এটি সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে প্রশাসন চালানো কী যে কঠিন! এখানে আরো একটা বিভাগ হওয়া উচিত। ইতোমধ্যে, আমরা ময়মনসিংহকে বিভাগ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি।

অনেকেই রাজধানী ত্যাগ করতে চান না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে ঢাকা ছেড়ে যেতে চাননি। এ রকম মতভেদ থাকবে। কিন্তু মানুষকে সত্যিকারভাবে সেবা দিতে গেলে মানুষের উন্নয়নের কাজ করতে গেলে এটা দরকার আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো আমরা ঢাকাকে যদি তিনটা ভাগে ভাগ করতে পারি। গ্রেটার ডিস্ট্রিক্ট বা জনসংখ্যা হিসেবে ধরে আমরা এটা করি। তখন মানুষ সত্যিকার সেবাটা পাবে। আরেকটা সুবিধা হবে অনেক কর্মকর্তার নিয়োগ, প্রমোশন, চাকরির সুযোগ। একদিকে জনসেবা হবে, অন্যদিকে প্রশাসনকে সম্প্রসারণ করা হবে। আবার আর্থিক বিষয়টা আমাদের চিন্তা করতে হবে। তাই, আপাতত ঢাকায় দুই বিভাগ হোক। গ্রেটার ময়মনসিংহ, আর ঢাকা ঢাকাই থাকুক।

এটা দ্রুত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে পরেরটা পরে দেখা যাবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা পরিবর্তন করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০ বছর বৃটিশদের গোলামি করেছি। আমাদের ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা পরিবর্তন করে আধুনিক চিন্তা-ভাবনা মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হবে। নইলে আমরা পিছিয়ে যাবো।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন তৈরিতে নিজেদের উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর আমাদের অনেক জমি পড়ে আছে। এগুলো কাজে লাগিয়ে কর্মকর্তাদের আবাসন তৈরির ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু ঢাকা শহর নয়, ঢাকার বাইরেও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ব্যাপারে কেন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের কাজ খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেতন ও চাকরি কমিশন-২০১৩-এর সুপারিশ আমরা হাতে পেয়েছি।

ধীরে ধীরে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের গুরুত্ব অনেক। আগামীতে কোন এলাকায় কী সমস্যা, কীসের অভাব, সম্ভবনা এগুলো বিবেচনা করে বাজেট প্রণয়ন করা হবে।

গণমুখী ও গতিশীল প্রশাসন গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *