নৈসর্গিক লীলাভূমি এক স্বপ্নদ্বীপের নাম সেন্টমার্টিন

কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

ভূমিকাঃ সেন্টমার্টিন দেশের সবচেয়ে অাকর্ষণীয় ও দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি । তাই এ দ্বীপের অাকর্ষণে হাজারো দেশী-বিদেশী পর্যটকের অাগমন ঘটে । সমুদ্রসীমা নিয়ে দেশটির সাথে যে বিরোধ ছিল,সেটি অান্তর্জাতিক অাদালতে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বেশ অাগেই । মূলত প্রবাল দ্বীপ, সেন্টমার্টিন ও এতদসংলগ্ন ছেঁড়াদ্বীপের মালিকানা নিয়ে কোন দেশের সাথে বাংলাদেশের অনিষ্পন্ন মালিকানাবিরোধ অতীতে ছিল না,এখনো নেই ।

সেন্টমার্টিনের ইতিহাসঃ সেন্টমার্টিন অামাদের দেশের সবচেয়ে সুন্দর ও মনোরম পর্যটন কেন্দ্র । দেশের সর্ব দক্ষিণের ভূখণ্ড টেকনাফ থেকে ৯ কিলোমিটারের মতো দক্ষিণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপটি স্থানীয়দের কাছে নারিকেল জিঞ্জিরা বা দারুচিনি দ্বীপ হিসেবে পরিচিত । ২৫০ বছর আগে অারব নাবিকেরা প্রথম এ দ্বীপে বসবাস শুরু করেন । তারা এর নাম দেন ‘জাজিরা’ বা উপদ্বীপ । ব্রিটিশ শাসনামলে এর নাম হয় সেন্টমার্টিন । প্রায় পাঁচ’শ বছর অাগে টেকনাফের মূল ভূখণ্ডের অংশ ছিল জায়গাটি । কিন্তু ধীরে ধীরে এটি সমুদ্রের নিচে চলে যায় ।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বৈশিষ্ট্যঃ সেন্টমার্টিন দ্বীপের অায়তন প্রায় অাট বর্গকিলোমিটার । এ দ্বীপের তিন দিকের শিলা জোয়ারের সময় তলিয়ে যায় এবং ভাটার সময় জেগে ওঠে । এগুলোকে ধরলে এর অায়তন হবে প্রায় ১০-১৫ বর্গকিলোমিটার । সেন্টমার্টিনের পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকজুড়ে রয়েছে প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার প্রবাল প্রাচীর, যা দ্বীপটিকে নয়নাভিরাম করে তুলেছে । সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল, ১৮৭ প্রজাতির শামুক -ঝিনুক, ১৫৩ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল,১৫৭ প্রজাতির গুপ্তজীবী উদ্ভিদ, ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪ প্রজাতির উভচর ও ১২০ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায় । দ্বীপবাসী অনেকে মাছ, নারিকেল, পেজালা এবং ঝিনুক ব্যবসা করে থাকেন । দ্বীপে কেওড়া বন ছাড়া প্রাকৃতিক বন বলতে যা বোঝায়, তা নেই । এছাড়াও কিছু মানুষ দোকানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে । ছোট শিশুরা দ্বীপ থেকে সংগৃহীত শৈবাল পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে থাকে । সম্পূর্ণ সেন্টমার্টিন দ্বীপেই প্রচুর নারিকেল এবং ডাব বিক্রি হয় ।
উপসংহারঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও অফুরান সম্পদসমৃদ্ধ সেন্টমার্টিন দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ ও অাকর্ষণীয় পর্যটন ক্ষেত্র । মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে পাশ কাটানোর জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে । এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জাতি ঐক্যবদ্ধ না হতে পারলে সেন্টমার্টিনকেও অারাকান ও রোহিঙ্গাদের ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে বলে অাশঙ্কা করা হচ্ছে ।

লেখক

সাইফুল ইসলাম

স্কুল শিক্ষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *