শ্রীপুরে স্কুল শিক্ষক রাসেল হত্যা মামলায় ৩ জন আটক

Slider জাতীয়


গাজীপুর: শ্রীপুরে মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রথান আসামী সহ ৩ জন আটক হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার এরা আটক হয়।

জানা গেছে, ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মাদকের প্রতিবাদকারী স্কুল শিক্ষক রাসেল হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত ইমরান মন্ডল কে। এর আগে গ্রফতার হয় আরো ২জন।

প্রসঙ্গত: মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় জেরে শিক্ষককে যুবককে তুলে নিয়ে রাতভর পিটিয়ে হত্যারর ঘটনা ঘটে

বাবা মায়ের পাঁচ সন্তানের মধ্যে রাসেল রানা বড়। সংসারে সুখের আশায় হতদরিদ্র পরিবারের বাবা বিভিন্ন বাড়ীতে দিনমজুরের কাজ করে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছেন। গত বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন রাসেল। লেখাপড়ার পাশাপাশি সে স্থানীয় শিশু কানন একাডেমি নামের একটি বেসরকারী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত ছিলেন।

এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজে রাসেলের অংশগ্রহন ছিল প্রশংসনীয়। এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল সে। এটাই তার কাল হয়ে উঠলো। গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় কয়েক মাদক ব্যবসায়ীদের ঘৃন্যতম এপেশা ছেড়ে আলোর পথে আসতে বলেন,এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাদকব্যবসায়ীরা। গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় বারতোপা বাজারে চায়ের স্টল থেকে ধরে নিয়ে যায় ইমরানের নের্তৃত্বে কয়েক মাদকব্যবসায়ী। পরে তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে বেধরক মারপিট করেন। একপর্যায়ে মারা গেলে রাতের আধারে উপজেলার লবলঙ্গ খালের তীরে তার মরদেহ ফেলে দেয়া হয়।

ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবরে বাবা তার বিভিন্ন স্বজনদের নিয়ে সারারাত খোঁজতে থাকেন পরে রোববার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্থানীয় বিলাইঘাটা এলাকায় লবলঙ্গ খালের পাড় থেকে ছেলের ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেন।

গাজীপুরের শ্রীপুরের সিংদিঘি গ্রামের সুজন আলীর ছেলে রাসেল। আর অভিযুক্ত ইমরান বারতোপা গ্রামের বাক্কার মন্ডলের ছেলে।

নিহত রাসেলের বাবা সুজন আলীর ভাষ্য, বহু কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছেন। ছেলে বাড়ীর পাশেই একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতো। অনেক স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। গতকাল দুপুরে বাড়ী থেকে বের হয়েছিল বাজারে যাওয়ার জন্য। তার বন্ধু তাকে মোটরসাইকেলে করে বাজার পর্যন্ত পৌছে দিয়েছিল। পরে সন্ধ্যায় খবর পান তার ছেলেকে ইমরান নামের এক যুবক বাজার থেকে ধরে নিয়ে মারধর করছে। সারারাত ছেলের সন্ধানে বাড়ী বাড়ী ঘুরেছেন। কিন্তু ছেলেকে পাওয়া যায়নি। সবাই বলছে অভিযুক্ত ইমরান কয়েকজনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে ঘুরেছেন আর মোড়ে মোড়ে নামিয়ে মারধর করেছেন।

তিনি আরো জানান, গত ২ সপ্তাহ আগে ইমরানকে স্থানীয় মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির কনষ্টেবল মফিজুল ইসলাম বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেন। এর পর থেকে তার বাড়ীতে এসে হুমকী দিয়ে গেছে ইমরান। গতকাল তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ইমরানের বাবার হাতে পায়ে ধরেছি। ইমরানকেও ছেড়ে দিতে মুঠোফোনে বারবার অনুরোধ করেছি,সে বলেছে কিছু মারধর করে ছেড়ে দিয়েছে রাতেই বাড়ী চলে আসবে। কিন্তু সে তো আর আসল না। সন্ধ্যা থেকে পুলিশ কনস্টেবল মফিজুলের সাথে বারবার ছেলেকে উদ্ধার করতে সহযোগিতা চেয়েছি,পুলিশও বলেছে সামান্য মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সে বাড়ী চলে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *