গাজীপুর: জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবালয়ের সংখ্যা প্রাই দুই ডজন। তবে আপডেট লাইসেন্স খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য সেবার এই প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা আবেদন করেছেন। কারো আবার ট্রেড লাইসেন্সও আপডেট নেই। এই অব্যবস্থাপনার জন্য কারা দায়ী, তা পাওয়া না গেলেও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এখানেও সক্রিয় এটা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিশেষ করে এই উপজেলার প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখতেন। তবে করোনার মধ্যে তারা যাচ্ছেন না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের আংশংকা, প্রাইভেট হাসপাতালে সরকারী বড় বড় ডাক্তার বসায় কারণেই হয়ত প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স করাকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সরেজমিন কালিগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ডাযগনষ্টিক সেন্টার, চক্ষু হাপসাতাল ও ডেন্টাল হাসপাতাল মিলে প্রায় দুই ডজন বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে কালিগঞ্জে। এ সকল প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে গিয়ে দেখা যায়, কারো লাইসেন্স আপডেট নেই। অনেকে ২০১৯-২০২০ সালের লাইসেন্সও আবেদিত কিন্তু হাতে পায়নি। তাই ২০২০-২০২১ সালের লাইসেন্স পাওয়া কঠিন।
সরকারী লাইসেন্সের জন্য আনুসাঙ্গিক যেসব কাগজপত্র লাগে, সেসব দিতে না পারার কারণে লাইসেন্স হচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষ বললেও লাইসেন্স না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে কি করে, সে বিষয়ে তেমন কোন সদোত্তর দিতে পারছেন না তারা।
কালিগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মুহা: ছাদেকুর রহমান আকন্দকে তার কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি বাইরে আছেন বলে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সঞ্জয় বলেছেন, সকল হাসপাতালের কাগজপত্র আপডেটের কাজ চলছে। তবে সরকারীভাবে তিনি কোন তালিকা দিতে পারেননি। তিনি প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর একটি খসড়া তালিকা দিয়েছেন যা টাইপ করা ও হাতে লেখা কিন্তু কোন স্বাক্ষর নেই।
সরেজমিন কালিগঞ্জের বিসমিল্লাহ ডায়গনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি সম্পূর্ন হাসপাতাল। এই প্রতিষ্ঠানে কেউ উপস্থিত নেই। তবে দুই জন কর্মচারীর মধ্যে মাহমুদুল হাসানকে ডাক্তারদের তালিকা দিতে বললে তিনি যে তালিকা দেন, তাতে প্রথম নামটিই হল কালিগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মুহা: ছাদেকুর রহমানের। তবে ওই কর্মচারী হাসপাতালের প্রকৃত মালিকের নাম বলতে পারেননি।
কালিগঞ্জের জামালপুরে অবস্থিত নুবহা জেনারেল হাসপাতালের মালিক মিলন মিয়া জানালেন, তার হাসপাতালে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সঞ্জয় বসেন। তবে করোনার সময়ে তিনি আসছেন না।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিবলী সাদিক বলেন, কালিগঞ্জে স্বাস্থ্য বিভাগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। জরিমানাও হয়েছে আগে। তবে এখন আবারো খতিয়ে দেখা হবে। স্বাস্থ্যসেবায় যেন কোন অসঙ্গতি না থাকে সেজন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। আমরা তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।