৩১ শতাংশ এলাকায় বন্যা

Slider জাতীয় সারাদেশ

ঢাকা: মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৩১ শতাংশ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। গত একমাস ধরে বন্যার পানিতে ভাসছেন সাধারণ মানুষ ও গবাদি পশু । ভাঙছে রাস্তাঘাট, বিলীন হচ্ছে বসতভিটেসহ ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্লাবিত এলাকায় আশ্রয়ের খুঁজে ছুটছে মানুষ।অনেকই শেষ সম্ভলটুকু হারিয়ে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। বানভাসিদের ভোগান্তি চরমে।

চলতি মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল মিলিয়ে অন্তত ১৮ জেলার নিম্নাঞ্চল টানা তিন সপ্তাহ ধরে বন্যার পানি আটকে আছে।

একমাসেই কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিন দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
এরফলে অনেক পরিবারের রান্নাবান্ন হচ্ছে চৌকির উপর। রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে, কিংবা ঘরের চালে। উলিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিপা সরদার জানান, এক মাসে ৩ বার বন্যার কবলে পড়েছি। এলাকার দরিদ্র মানুষ ভয়াবহ অবস্থার মধ্যদিয়ে দিন কাটাচ্ছে।এমন পরিস্থিতি আর কত দিন থাকবে বুঝতে পারছি না।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশের ৩১টি জেলা এক মাসের মধ্যে তিন দফায় বন্যা কবলিত হয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দেশের নদ-নদীগুলোতে তাদের ১০১টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৩টি পয়েন্ট শনিবার পানি বেড়েছে। আর কমেছে ৫৮টি পয়েন্টে। এছাড়া ১৭টি নদীর ২৭টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপরে বয়ে যাচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, কুড়িগ্রাম ,মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ি, শরীয়তপুর, গাইবান্ধা, নাটোর, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নওগাঁ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিম্নাঞ্চলের পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, এবারের বন্যা দীর্ঘায়িত হল। একবার বন্যার পানি কমতে না কমতেই, কোথাও দ্বিতীয় দফা চলছে, আবার কোথাও তৃতীয় দফা বন্যা শুরু হয়।চলমান বন্যার পানিতে এখন পর্যন্ত দেশের অন্তত ৩১ শতাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে পরিস্তিতি আরো অবনিত হতে পারে।আরও সাত থেকে দশ দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *