জাতীয় পার্টি ও জাতীয় পল্লী পার্টির আয়োজনে এরশাদের মৃত্যু বার্ষিকী পালন

Slider জাতীয় রংপুর

ঢাকা: সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পল্লী পার্টির আদর্শিক নেতা পল্লীবন্ধু আলহাজ্জ্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ১ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১৪ই জুলাই সারাদিনব্যাপী পবিত্র কোরান খতম, দোয়া, মিলাদ ও তবারক বিতরণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই দিনে জাতীয় পার্টি তাদের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্জ্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ১ম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করছে।

জাতীয় পল্লী পার্টি গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ, কোরান খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এসম অসংখ্য মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন।

দলীয় সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদে মসজিদে অনুরুপভাবে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়।

এদিকে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল আজ (মঙ্গলবার)। গত বছরের এই দিনে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত্যুবার্ষিকী পালনে জাতীয় পার্টি, এরশাদ ট্রাস্ট, ব্যক্তিগতভাবে রওশন এরশাদ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে। একই সঙ্গে দিবসটি পালন করছে জাতীয় পল্লী পার্টি নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল। এই দলের প্রধান হলেন ব‌্যারিস্টার দিলারা খন্দকার। জাতীয় পল্লী পার্টির পক্ষ থেকে আজ ১৪জুলাই মঙ্গলবার এরশাদের ১ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশ দিনব্যাপি পবিত্র কোরান খতম দোয়া ও বাদ আসর মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে এরশাদ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বেলা ১২টায় কাকরাইলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদের প্রতীকী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিকেলে প্রেসিডেন্ট পার্কে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া সকাল ১০টায় কাকরাইলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করবেন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ও মহানগর জাপার নেতারা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাবলার পক্ষ থেকে কোরআন খতম ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার পক্ষ থেকে বাদ আসর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া শ্যামপুর-কদমতলীর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৩০ সালে অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এরশাদ। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসেন। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন এরশাদ। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন তিনি। ১৯৯১ সালে এরশাদ গ্রেফতার হন। ১৯৯১ সালে জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও এরশাদ সংসদে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন তিনি।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করে তার দল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে বিজয়ী হয়। এরপর দশম ও সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি চলতি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *