করোনায় শিশু সাহিত্যিক আলম তালুকদারের মৃত্যু

Slider জাতীয়

মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মেয়ে আফিয়া নূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত শনিবার বাবার নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এছাড়া বাবার হার্টে ছয়টা ব্লক ছিলো, ডায়াবেটিসও ছিলো। আলম তালুকদারকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলেও জানান তিনি।

আফিয়া নূর আরো বলেন, মঙ্গলবার রাতে তাকে যখন সিএমএইচে ভর্তি করানো হলো, তখন নিজেই পায়ে হেঁটে গেলেন। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।
পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলম তালুকদার ১৯৫৬ সালের ১লা জানুয়ারি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে দেওয়াল পত্রিকার মাধ্যমে লেখালেখি শুরু তার। পরে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর হয়ে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন।

আলম তালুকাদরের প্রথম বই ‘ঘুম তাড়ানো ছড়া’ প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। তার ছড়ার উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে ‘খোঁচান ক্যান’, ‘চাঁদের কাছে জোনাকি’, ‘ডিম ডিম ভূতের ডিম’, ‘ঐ রাজাকার’, ‘যুদ্ধে যদি যেতাম হেরে’, ‘বাচ্চা ছড়া কাচ্চা ছড়া’, ‘ছড়ায় ছড়ায় আলোর নাচন’, ‘জাদুঘরের ছড়া’, ‘ছড়ায় ছড়ায় টক্কর’, ‘ছড়াসমগ্র’ ইত্যাদি। তার লেখা শিশুতোষ গল্পের বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘মহাদেশ বাংলাদেশ উপদেশ’, ‘শিশুদের শিশুটামি’, ‘অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’, ‘নাই দেশের রূপকথা’, ‘ভূতের সঙ্গে ভূত আমি’, ‘কিশোর সমগ্র’, ‘গল্পসমগ্র’ প্রভৃতি। বেশকটি গ্রন্থও সম্পাদনা করেছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান স্মারক গ্রন্থ’, ‘জাদুঘর বিচিত্রা’, ‘টাঙ্গাইল জেলার স্থান নাম বিচিত্রা, ‘ছোট ছোট উপাখ্যান হাসিতে আটখান।

শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য আলম তালুকদার অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, জসীম উদদীন পুরস্কার, কবি কাদির নওয়াজ পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি জাতীয় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *