স্থানীয় পরিস্থিতি বুঝে যখন যে এলাকায় প্রয়োজন সে এলাকায় ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জোনিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংজ্ঞা ও বাস্তবায়ন কৌশল অনুযায়ী অব্যাহতভাবে স্থানীয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং জোনিং সিস্টেম চালু করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত সাপেক্ষে তা বাস্তবায়ন করবে।
ওই প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিকভাবে রেড জোন এলাকার জন্য বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত সময়ে কৃষিকাজ কাজ করা যাবে।
২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে। তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।
৩. বাসা থেকেই অফিসের কাজ করতে হবে।
৪. কোন ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবল অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবেন। রিকশাভ্যান, সিএনজি অকেটারিকশা, ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না।
৬. সড়কপথ, নদীপথ ও রেলপথে জোনের ভিতরে কোন যান চলাচল করবে না।
৭. জোনের ভিতরে ও বাইরে মালবাহী নৌযান ও জাহাজ কেবল রাতে চলাচল করতে পারবে।
৮. প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমন পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৯. এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে।
রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবল হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে। বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম/স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
১০. আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল এটিএম-এর মাধ্যমে করা যাবে। তবে সীমিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।
১১. এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হবে। শনাক্ত রোগীরা হোম আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থাকবে।
১২. শুধু মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মসজিদ/উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখে ইবাদত করতে পারবেন।
১৩. সাধারণভাবে রেড জোন ২১ দিনের জন্য বলবৎ হবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে রেড জোন পরিবর্তন করা হবে।
রেড জোনসহ দেশের সব অঞ্চলে সাধারণ নিয়মাবলী:
১. সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়া, জীবানুমুক্তকরণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২. করোনা রোগ/ সংক্রমণ শনাক্তকরণ, তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
৪. স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল ও জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। অসুস্থ ব্যক্তি পরিবহনকারী যান/ ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলাচল করবে।
৫. সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
৬. এসব কার্যক্রমের তদারকির জন্য কার্যকরী সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং মাঠকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ১৫ই জুন জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করতে হবে। রেড জোন বাস্তবায়নকালে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সবার প্রযোজনীয় নাগরিক সেবাসহ অন্য সুবিধা-অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।