টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের দোকানপাট খুলেছে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মানছেননা ক্রেতা-বিক্রেতারা

Slider গ্রাম বাংলা


সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ গতকাল রবিবার (১০ ই মে) থেকে সারাদেশে স্বাস্থ্য বিধিসহ বিভিন্ন নির্দেশনা মেনে সব ধরনের মার্কেট ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন সরকার। টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলে প্রায় দেড় মাস পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার রোববার প্রথম দিনে দেখা গেছে বাজার রোড সহ মেইন রোডস্থ দোকানপাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অবশ্য, অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্যান্য দিনের মতো বন্ধ দেখা গেছে।

সরকারিভাবে দোকানপাটে কেনাকাটার পরিসরকে সীমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনো মার্কেটেই ক্রেতা বা বিক্রেতারা তা মানছেন না। সামনে ঈদুল-, ফিতরকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের তৈরি পোশাক কিংবা জুতা-স্যান্ডেলের দোকানে মানুষের ভিড় দেখা গেছে বিকালের পর পর্যন্ত। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বিকাল চারটার পর ব্যবসায়ীরা বন্ধ দিয়েছিলেন নিজস্ব দোকানপাট।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আজকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঠে দেখা না গেলেও কিছু স্বেচ্ছাসেবকদের দেখা গেছে মানুষকে সচেতনতার মাধ্যমে নিরাপদ শারীরিক, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা সম্পন্ন করায় উদ্বুদ্ধ করতে। কিন্তু তারা অল্প সময় পরে জনতার চাপে অসহায় হয়ে বাজার রোড এলাকা ত্যাগ করেছেন।

এছাড়াও ঘাটাইল শহরের রড-সিমেন্টসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অনেক দোকান প্রথম দিনে বন্ধ দেখা গেছে। আর অনেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্তে।

এদিকে অন্যান্য দোকানের তুলনায় ঈদের কেনাকাটার জন্য শহরের বিভিন্ন মার্কেটে মানুষের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। আএ সেখানে বেচা-কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এমনকি পছন্দের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকসহ অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদেরকে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি অবস্থা। এমনকি ঠেলাঠেলিও করতে দেখা গেছে। আবার অনেককে তাদের শিশু সন্তানদের নিয়েও কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

এছাড়াও মার্কেটের হাতে গোনা কয়েকটি বড় দোকানে বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পড়তে দেখা গেলেও ছোট-খাট দোকানগুলোতে বিক্রেতারা ন্যুনতম কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

ঘাটাইলের ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায় যে, “গতকাল রবিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে আংশিকভাবে কিছু দোকান খোলা হয়েছে। আর যদি ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান পরিচালনা করেন এবং স্থানীয়ভাবে মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বহুলভাবে না ঘটে তাহলে পর্যায়ক্রমে সব মার্কেট ও দোকানপাট খুলবেন ব্যবসায়ীরা।”

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী নেতার নিকট বলেছেন,”দোকান বন্ধ রাখার জন্য অনেক মার্কেট মালিক আমাদের অনুরোধ যেমন জানিয়েছেন, ঠিক তেমনি অনেক ব্যবসায়ী দোকান খুলে দেয়ার কথাও বলেছেন অর্থনৈতিক কারণে। তবে সবার সাথে কথা বলে মার্কেট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসাথে আগামী কয়েকদিন দোকান খোলা রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে, যদি দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতাদের সমাগম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এবং ব্যবসায়ীরা সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না, তবে তখন দোকান বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।”

এদিকে সারাদেশে মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সংখ্যা যখন ঊর্ধ্বমুখী ঠিক সেই মুহূর্তে ঈদের ওজুহাতে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মার্কেট ও দোকানপাটগুলো খুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও আত্মঘাতী বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন সুশীল সমাজের অনেকেই। তারা অনেকেই মনে করছেন,”দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত আরকটু ভেবেচিন্তে নেয়া উচিৎ ছিল। তবে একবার সংক্রমণ ঘটে গেলে তখন আর কিছুই করার থাকবে না বলে তারা মনে করছেন। করোনা চিকিৎসা থেকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেক বেশী কার্যকরী।”

স্থানীয় জাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, “আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভুঞাপুর, মধুপুর, কালিহাতী, ধনবাড়ীতে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর যেহেতু এইসব উপজেলা থেকে অনেক মানুষই ঘাটাইলে ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন, সেহেতু সেইসব উপজেলা থেকে মানুষের আগমন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিৎ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *