ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকের বডিগার্ডের গুলিতে আহত মাঈনউদ্দিন মাহিন (৩৪) সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মারা গেছেন। এই নিয়ে মন্ত্রীর বডিগার্ডের গুলিতে দুইজন নিহত হলেন।
আজ শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ভোর রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই হাসপাতালে গত ১৬ এপ্রিল রাত থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত মাহিন কালিয়াকৈর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকার আজগানা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
গত ১৬ এপ্রিল রাতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বডিগার্ড কিশোর কুমার সরকার তার মাদক ব্যবসায়ী দুই বন্ধুকে ডেকে এনে গুলি করেন। পরে ঘটনাস্থলেই মারা যান টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকার আজগানা গ্রামের সফুরের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ (৩৫)। আর মাহিনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আজ তিনিও মারা গেলেন। এই নিয়ে এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দুইজন।
ঘটনার পরদিন নিহত শহিদের স্ত্রী মোসা. মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় মামলা (নম্বর ৭) করেন। পরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৭ এপ্রিল দুপুর সোয়া ১টার দিকে সাভারের আশুলিয়ার শিমুলিয়ায় বন্ধু তারাইরুলের বাসা থেকে মন্ত্রীর বডিগার্ড সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কিশোর কুমারকে (৩৩) সরকারি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড তাজা গুলিসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের নারায়ন কুমার সরকারের ছেলে। কিশোর পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি করে মন্ত্রীর বডিগার্ড হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, মাহিমের বুকের ডান পাশে ও পেটের উপরে দুটি গুলি লেগেছিল। গুলি দুটি তার শরীর ভেদ করে বেরিয়ে গেছে। এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে থেকে আজ ভোরে তার মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, মাহিন মৃত্যুর আগে জবানবন্দীতে বলেছে কিশোর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুজনকে গুলি করেছে। নিহত দুজন ও ঘাতক পরস্পর বন্ধু ছিলেন। তিনজন একসঙ্গে বসে প্রায়ই নেশা করত। কিশোর সন্দেহ করতো তার স্ত্রীর সঙ্গে মাহিনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। তবে কিশোরের স্ত্রী মাহিন নামে কাউকে চেনে না বলে দাবি করেছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে পুলিশ সদস্য কিশোরকে দোষী প্রমাণ করতে সব ধরনের আলামত ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।