আমিন মোহাম্মদ
সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
রিয়াদঃ অনতিবিলম্বে সকল সৌদি আরবে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদেরকে এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট গ্রহনের জন্য গত ২৭মে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস একটি জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে তুলনামুলক কম বাংলাদেশি এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য দূতাবাসে গেলেও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এমআরপি/ডিজিটাল এর আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অস্বাভাবিকহারে।
কিন্তু জনবল সংকটের কারনে দুরদুরান্ত থেকে আসা বাংলাদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছেনা দূতাবাস।
রিয়াদ থেকে প্রায় ৫’শ কিলোমিটার দূর থেকে আসা শরিফ নামের একজন প্রবাসী এই গ্রামবাংলানিউজকে বলেন, আমার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ইকামা নবায়ন হচ্ছেনা। ৭৫রিয়াল ভাড়া দিয়ে পাসপোর্ট নবায়ন করতে আসলে দূতাবাস থেকে জানানো হয় পাসপোর্ট নবায়ন হবেনা এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট করতে হবে।
তাঁদের কথামতো ওইদিন এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্টের ফরম নিয়ে চলে যাই এবং একদিন পর আবার ডিউটি বাদ দিয়ে দূতাবাসে আসি। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যায় ডাটা এন্ট্রি,ছবি তুলা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আবেদন পত্র জমা দিয়ে একস্যারকে অনুরোধ করে ১বছরের জন্য পুরাতন পাসপোর্ট নবায়ন করি। এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট নেয়ার জন্য একমাস পর আবার ৫শ কিলোমিটার দূর থেকে এখানে আসতে হবে বলেন শরিফ।
বুধবার সরেজমিনে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ঘুরে এমন শ’খানে শরিফের দেখা পাওয়া যায়। কেউ সিড়িতে বসে ঘুমাচ্ছেন কেউ দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য দালালদের সঙ্গে চুক্তি করছে আবার অফিস রুম থেকে কোন কর্মকর্তা বের হলেই কেউ স্যার স্যার করে তার পিছু নিচ্ছেন দ্রুত এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন গ্রহন করার জন্য।
রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (পলিটিক্যাল) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন এই গ্রামবাংলানিউজকে বলেন, এপর্যন্ত (১০জুন) রিয়াদ দূতাবাস থেকে ১লাখ ৫৪হাজার ৪২৬টি মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের এন্ডরোল (আবেদন পত্র,আঙ্গুলের ছাপ,ছবি উঠানো) করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দূতাবাসে এমআরপি/ডিজিটাল এন্ডরোল করার জন্য ৫টি মেশিন রয়েছে যা দিয়ে দৈনিক ২৫০টি এমআরপি’র এন্ডরোল করা সম্ভব সেখানে আমরা বর্তমানে প্রতিদিন ৭০০/৭৫০টি এমআরপি এন্ডরোল করছি।
মোশাররফ হোসাইন আরো বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট প্রদানের কাজ সম্পন্ন করতে রিয়াদ দূতাবাস এবং জেদ্দা কনস্যুলেটের জন্য ৩০টি সিষ্টেম (এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন গ্রহন উপযোগি কম্পিউটার), সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রাম্যমান সেবা দেয়ার জন্য আরো ৩০টি সিষ্টেম, সিষ্টেম পরিচালনার জন্য ৬০জন লোক এবং জন্ম নিবন্ধন করার জন্য আরো পাঁচ জন কর্মকর্তা চেয়ে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আগামী ১০মাস অর্থাৎ ৩০০দিনের মধ্যে অবশিষ্ট ২৫লক্ষ বাংলাদেশিকে এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট দিতে হলে প্রতিদিন ৮৩০০জনকে এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন জমা নিতে হবে।
শুধু তাই নয় দূতাবাসে আবেদন জমা নেয়ার পর সে ফাইল পাঠানো হচ্ছে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে একটি এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট সৌদিতে আসতে সময় লাগছে ৩৫/৪৫দিন।
অনতিবিলম্বে ঢাকা থেকে কম্পিউটারসহ একটি অভিজ্ঞ টিম সৌদিতে না আসলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১০% প্রবাসীদেরকেও এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট সরবরাহ করা সম্ভব হবেনা বলে নামপ্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, ফাইল ঢাকায় না পাঠিয়ে এখানে আবেদন গ্রহন করার পর এখান থেকেই এমআরপি/ডিজিটাল পাসপোর্ট সরবরাহের ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দূতাবাস আবেদন জানিয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।