প্রচ্ছদে মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্রসহ শার্লি এবদো প্রকাশিত

বাংলার আদালত সাহিত্য ও সাংস্কৃতি

59009_char

 ফ্রান্সের প্যারিসে ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোর এ সপ্তাহের সংখ্যার প্রচ্ছদে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আঁকা ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। শার্লি এবদোর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন সংখ্যার প্রচ্ছদটি ম্যাগাজিনটির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যঙ্গচিত্রটির অর্থ, শার্লি এবদোর সাংবাদিকরা জঙ্গিদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। হামলার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় নতুন সংখ্যাটি প্রকাশিত হলো। মহানবী (সা.)-কে সাদা পাগড়ি পরিহিত ও কান্নারত অবস্থায় উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই ব্যঙ্গচিত্রে ফরাসি ভাষায় লেখা ‘জে সুই শার্লি’ বা ‘আমি শার্লি’ লেখা প্ল্যাকার্ড ধরে আছেন তিনি। ব্যঙ্গচিত্রের ওপরদিকে লেখা ‘সব ক্ষমা করা হয়েছে’। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এদিকে শার্লি এবদোর নতুন সংখ্যার প্রচ্ছদ পক্ষে ও বিপক্ষে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মুসলমান নেতারা সতর্ক করে বলেছেন, নতুন করে প্রকাশিত ব্যঙ্গচিত্র ঘৃণা ও ক্ষোভকে উস্কে দেবে এবং আরও হামলার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। এদিকে গত সপ্তাহের মর্মান্তিক ঘটনা প্রসঙ্গে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভলস গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার দেশের লড়াই চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে, মুসলমানদের সঙ্গে নয়। শার্লি এবদোর বুধবারের এ সংস্করণটি ৩০ লাখ কপি ছাপা হয়েছে। সাধারণভাবে, ম্যাগাজিনটি প্রতি সপ্তাহে ৬০ হাজার কপি ছাপা হয়। আজ প্রকাশিত সংখ্যাটি ‘সারভাইভার্স ইস্যু’ বা ‘হামলায় বেঁচে যাওয়াদের সংস্করণ’ বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ফ্রান্সের দৈনিক সংবাদপত্র ‘লিবারেশন’-এর কার্যালয় থেকে কাজ করছেন ম্যাগাজিনটিতে হত্যাযজ্ঞে বেঁচে যাওয়া সাংবাদিক ও কার্টুনিস্টরা। ফ্রান্সের বিভিন্ন গণমাধ্যমে শার্লি এবদোর এ সংখ্যার প্রচ্ছদের জন্য আঁকা ব্যঙ্গচিত্রটি আগেই ছাপা হয়েছে। শার্লি এবদোর আইনজীবী রিচার্ড ম্যালকা বলেছিলেন, আমরা নতি স্বীকার করবো না। তিনি বলেন, ‘আমি শার্লি’র মর্মার্থ হচ্ছে, ঈশ্বর বা ধর্মমতকে কটাক্ষের অধিকার। শার্লি এবদোর কর্মীরাই নতুন সংস্করণের জন্য কাজ করছেন। অন্য কার্টুনিস্টরা পরবর্তী সংখ্যায় অবদান রাখতে চাইলেও, তাদের অনুরোধ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। হামলায় ম্যাগাজিনটির সম্পাদক ও ৪ কার্টুনিস্টসহ ৮ সাংবাদিক প্রাণ হারান। ওই হামলায় আরও ২ দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট ১২ জন নিহত হন। গত সপ্তাহে ৩ দিনে সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ জন নিহত হন। শার্লি এবদোর কার্যালয়ে হামলার পর একটি সুপারমার্কেটে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলার পর ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গত রোববার ৩৭ লাখ মানুষ ফ্রান্সজুড়ে সংহতি মিছিলে অংশ নেন। বিশ্বের ৪৪টি রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ তাতে অংশ নেন। শুধু প্যারিসেই ১৬ লাখ মানুষ সংহতি মিছিলে অংশ নেন। এদিকে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রথমবারের মতো সংহতি সমাবেশে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *