টাঙ্গাইলে আট বছরের শিশুকন্যা আসফিয়াকে ফেরত পেতে চান মা হেমা

Slider নারী ও শিশু

সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের কুমুল্লী নামদার উত্তর চরপাড়া গ্রামের গৃহবধূ হেমা আক্তার তার গর্ভজাত শিশুকন্যা আসফিয়া আক্তারকে ফেরত পেতে চান। তার আট বছরের অবুঝ কন্যা আসফিয়া সৎমায়ের অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতেছেন বলে অভিযোগ করেন অসহায় মা হেমা আক্তার। এছাড়াও তার মেয়েকে ফেরত না পেয়ে ওই গৃহবধূ দিনরাত চোখের পানি ফেলছেন।

এদিকে জানতে পাওয়া গেছে যে, টাংগাইল সদর উপজেলার কুমুল্লী নামদার উত্তর চরপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. হিরা মিয়ার একমাত্র কন্যা হেমা আক্তারের সাথে পার্শ্ববর্তী সুরুজ দক্ষিণপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছেলে শহীদুল ইসলামের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরেই শহীদুল ইসলাম কাজের সন্ধানে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন।

হেমা আক্তার জানিয়েছেন, “স্বামী শহীদুল ইসলাম প্রবাসে থাকতেই বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের বিশা মিয়ার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে বিলকিছ আক্তারের সাথে মোবাইলফোনের মাধ্যমে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এরপরে দেশে ফিরে এলে ওই পরকীয়ার সম্পর্ক আরো জোরদার হয়ে যায়।”

উল্লেখ্য যে, পরকীয়ার কারণে হেমা-শহীদুলের পরিবারে অশান্তি দেখা দিয়েছিল। এতে শহীদুল তার স্ত্রী হেমা আক্তারের উপর নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করতেন।।আর এক পর্যায়ে গৃহবধূ হেমা আক্তার বাধ্য হয়ে স্বামী শহীদুল ইসলামকে তালাক দিয়ে পিত্রালয়ে চলে গিয়েছিলেন।কিন্তু এ সময় তার গর্ভজাত কন্যা আসফিয়া আক্তারকে স্বামী শহীদুল ইসলাম রেখে দিয়েছিলেন। এতে একাধিকবার তাকে হেমা আক্তার নিজের কাছে ফেরত চাইলেও দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেছেন, “তিনি বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে শহীদুল ইসলাম তার পরকীয়ার প্রেমিকা বিলকিছ আক্তারকে বিয়ে করেন। ফলে বিলকিছ আক্তার বাড়িতে এসে শিশুকন্যা আসফিয়া আক্তারকে মেনে নিতে পারেন নি। তারপর তিনি আসফিয়ার উপর অমানষিক, অত্যাচার-নির্যাতন চালাতে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি বিলকিছ আক্তার বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় শিশুকন্যা আসফিয়াকে সাথে নিয়ে যান।”

বাবার বাড়ির প্রতিবেশি আ. ছোবহানের জামাতা রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়া পাওনা টাকা চাইতে বিলকিছ আক্তারের কাছে গিয়েছিলেন।।এতে দীর্ঘ সময় কথা বলার এক পর্যায়ে শিশু আসফিয়াকে রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়ার সাথে একটি ঘরে রেখে বিলকিছ আক্তার বাইরে চলে গিয়েছিল। আর এ সময় বাবুল মিয়া শিশু আসফিয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে বাবুল মিয়া পালিয়ে যায়।

তারপরে স্থানীয় মাতব্বর আব্দুল আওয়াল, কায়েম উদ্দিন বেপারী, সলিম উদ্দিন সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রঙ মিস্ত্রি বাবুল মিয়াকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেন। আর এ বিষয়ে বাসাইল থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহন করেনি বলে হেমা আক্তার দাবি করেছেন।।

হাবলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম, ইউপি সদস্য মো. পলাশ মিয়া জানিয়েছেন, “শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি তারা শুনেছেন। এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ না থাকায় তারা কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন নি।”

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এসএম তুহীন আলী বলেছেন, “পরকীয়ার কারণে সংসার ভেঙে যাওয়ায় শিশু কন্যাকে হেমা তার কাছে নেওয়ার চেষ্টায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। মূলত এ ধরণের কোন ঘটনা ওই এলাকায় ঘটেনি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *