টাঙ্গাইলে খালের মুখে জমি ভরাটে হুমকিতে ২০০ হেক্টর ফসলি জমি

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের তারাবাড়িতে প্রায় ২০০ হেক্টর ফসলি জমির পানি প্রবাহের ২টি খালের মুখে জমি ভরাট করা হয়েছে।। এতে নগরবাড়ি, মাইস্তা, তারাবাড়ি, তাতিহারা, পিচুরিয়া ও লুহুরিয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক কৃষকের প্রায় ২০০ হেক্টর আবাদি জমির ফসল অতিবৃষ্টি ও বর্ষাকালে বন্যায় ফসল উৎপাদন হুমকিতে পড়বে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।

সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে, তারাবাড়ি গ্রামের মৃত হোসেন আলী ভূঁইয়ার ছেলে অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া দারুল কোরআন কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত আবাদি জমি ২টি খালের মুখে নিষিদ্ধ এস্কেভেটর দিয়ে ভরাট করছেন। তিনি দাবি করেছেন, এমপি, ইউপি চেয়ারম্যান, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ প্রশাসন জমি ভরাট বিষয়ে অবগত আছেন।

উল্লেখ্য যে, উক্ত সময়ে সাংবাদিকদেরকে কারা খবর দিলো? কারা আনলো? ইত্যাদি প্রশ্ন করে অসহায় কৃষকদের উপর ক্ষোভ ঝাড়তেও দেখা গিয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আঃ মান্নান, আঃ জলিল সহ অনেকে জানিয়েছেন, “এদিকে স্থানীয় বৈঠকে চকের পানি নেমে যাওয়ার বিষয়ে আব্দুল কাদের ভূঁইয়া খালের চুঙ্গি (সুড়ঙ্গ) বরাবর পাঁকা ড্রেন তৈরি করে বিকল্প ব্যবস্থা রাখার কথা বললেও, তা না করেই জমি ভরাট চলমান রাখায় অতিবৃষ্টি ও বর্ষাকালে বন্যায় ফসল উৎপাদন হুমকির উদ্বেগের কথা।”

তারাবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন,”এইভাবে আমগোরে পেটে লাথি মাইর‌্যা খালের মুখে ক্ষেত ভরাট করলে আমার ১৫ বিঘা জমির আমন ধান বন্যার পানিতে ডুইবা যাবো।”

এছাড়াও ৯০ বছর বয়সী কৃষক আইয়্যুব আলী সরকার বলেছেন, “খালের মুখে জমি ভরাটের কারণে অতি বৃষ্টিতে ইরি ক্ষতিগ্রস্ত ও বন্যায় ৬টি গ্রামের অন্ত্যত ৫শত কৃষকের আমন ধান ডুবে যাবে।”

আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জানিয়েছেন, “ওয়াকফকৃত (ব্যক্তিগত) সম্পত্তি ভরাট করে মাদরাসা নির্মাণ করবো, জোর করে কি পানির যাওয়ার রাস্তা নিবেন? ” ওয়াকফ্ দলিলের নং কত জানতে চাইলে তা বলতে পারেননি, তবে গত ২৫শে মার্চ দলিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আর প্রয়োজনে আলোচনা সাপেক্ষে মাদরাসার সামনে দিয়ে (খাল থেকে ১৫ গজ পশ্চিমে ফসলি জমির উপর দিয়ে) পানি যাবার ব্যবস্থা করে দিবেন। ”

নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শুকুর মাহমুদ তালুকদার এ বিষয়ে বলেছেন, “কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার পর জমি ভরাট করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি এ বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন। ফসল উৎপাদন সুরক্ষিত করার লক্ষে পানি প্রবাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”

সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান এ বিষয়ে জানিয়েছেন, “বিষয়টি অবগত নই, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *