করোনা সারাবে আশায় মদ খেয়ে ২৭ ইরানির মৃত্যু!

Slider জাতীয় বিচিত্র

মদপান করলে শরীরে করোনাভাইরাস ঢুকতে পারে না-এমন গুজবে বিশ্বাসী হয়ে বেশি বেশি মদ পানে প্রাণ গেল ২৭ ইরানি নাগরিকের। মিথানলের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে এবিসি নিউজ।

করোনায় চীন, ইতালির পর ইরানে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে এরই মধ্যে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার। এ নিয়ে আতঙ্কে দেশটির মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ইরানে গুজব রটে, অ্যালকোহল মানুষকে করোনার থেকে বাঁচাতে পারে। এই গুজবে পা দিয়েছিল অনেকেই। আর তার মাশুলও গুনতে হল প্রাণ দিয়ে।

বিষাক্ত মদপানে ইরানে এরই মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ২০ জন দক্ষিণ পশ্চিমের কুজেস্তানের বাসিন্দা। বাকি ৭ জন উত্তরের আলবরজ প্রদেশের বাসিন্দা। এ ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ২১৮ জন। তাদের শরীরেও বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গেছে।

ইরান প্রশাসন জানায়, গুজবে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই মিথানল খেয়েছিলেন তারা। মাত্রাতিরিক্ত পান করলে লিভারের ক্ষতি হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তো মৃত্যুও ঘটে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১৯৭৯ সালে অ্যালকোহলিক স্পিরিট, ওয়াইন এবং বিয়ার পান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবুও দেশটির অনেক লোক নিয়মিত ভদকা এবং অন্যান্য মদপান করে থাকেন। তারা এগুলো বাড়িতে কিংবা গোপনে পান করে থাকেন।

অধিকাংশ সময়ে তারা বাড়িতে তৈরি উচ্চমাত্রার মিথেনল সমৃদ্ধ মদপান করেন। সঠিকমাত্রায় পরিশোধন না হওয়া বাড়িতে তৈরি এ ধরণের মদ পানের ফলে তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিষক্রিয়া বেশি হলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। ইরানে বাণিজ্যিকভাবে মদ উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। যেহেতু ইরানে কোনও বাণিজ্যিক মদ বিপণনের কোন সুযোগ নেই, তাই তারা বাড়িতে তৈরি মদ খেয়েই আত্মারা প্রশান্তি নিবারণ করে। ফলে মাঝে মধ্যে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। এরপর জনগণের মধ্যে গুজব ছড়িয়েছে যে, অ্যালকোহল পান করলে করোনার সংক্রমণ রোধ করা যায়। ফলে এই সময়ে দেশটিতে অ্যালকোহল পানের পরিমাণ বেড়ে গেছে বহু গুণে।

চিকিত্সকরা এখন জনগণকে সতর্ক করে দিচ্ছেন যে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে রোধে অ্যালকোহলের কোনও প্রভাব নেই এবং তাদের কেবল চিকিৎসকদের সাধারণ পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *