ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনবর্ষের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল প্রকল্পটি ২০১২-২০২৪ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় বিশেষ উদ্যোগে আওয়ামী লীগ সরকার নির্ধারিত সময়ের দুই বছর ৬ মাস আগে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী জানান, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত (১.১৬ কিলোমিটার) করতে সোশ্যাল সার্ভে চলছে। দেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সার্বিক গড় অগ্রগতি ৪০ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্তকাজের অগ্রগতি ৬৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৩৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহকাজের সমন্বিত অগ্রগতি ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ঢাকা শহরে চলছে বিআরটিসির ৩১৭টি বাস
সরকারি দলের সাংসদ আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে বিআরটিসির বহরে ১ হাজার ৮৩০টি বাস রয়েছে। এ মুহূর্তে দেশে চলাচলকারী বিআরটিসির বাসের সংখ্যা ১ হাজার ৩৩৪টি। ঢাকা শহরে বর্তমানে ৩১৭টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে আগের ছিল ২১৭টি। বর্তমানে ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের ৬০০ বাসের মধ্যে ১০০টি বাস আগের বহরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাত্রীসেবা প্রধান করছে।
শহীদুজ্জামান সরকারের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিআরটিসির এ পর্যন্ত ৫২টি বাস অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছেন। তা ছাড়া বিআরটিসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্টাফ বাস হিসেবে দেশের ১৫ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭৫টি বাস ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পরিচালিত হচ্ছে।
পাট দিয়ে তৈরি পলিথিনের প্রসারে পাইলট প্রকল্প
সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য আদিবা আনজুমের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানান, পাট দিয়ে তৈরি পলিথিনের প্রসারে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে দৈনিক এক লাখ পিস সোনালী ব্যাগ উৎপাদনের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পরেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সোনালী ব্যাগ উৎপাদন শুরু হবে।
আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে দেশে পাট উৎপাদন হয়েছে ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার বেল। বর্তমানে সরাসরি পাট রপ্তানি করা হয় ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, আইভরিকোস্ট, যুক্তরাজ্য, জিবুতি, ব্রাজিল, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, তিউনিসিয়া, রাশিয়া, ইথিওপিয়া ও বেলজিয়ামে।
সংরক্ষিত আসনের সদস্য তাহমিনা বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী জানান, বিজিএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন মিলগুলোতে মজুত করা পাটপণ্য বিক্রি হলে, সরকারি মিলে দেওয়া ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীদের ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের বকেয়া টাকা ২০২০ সালের জুনের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হবে।
বেনজীর আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী জানান, দেশের সরকারি পাটকলের সংখ্যা ২৩। এর মধ্যে একটি পাটকল মামলাজনিত কারণে বন্ধ আছে। হস্তান্তর চুক্তির শর্ত ভঙ্গের কারণে সরকার ৬টি পাটকল পুনঃগ্রহণ করেছে। এই ৬টির মধ্যে আবার ৫টির বিষয়ে আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে। অপরটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। অন্য কোনো পাটকল বন্ধ না থাকায় নতুন করে পাটকল চালুর পরিকল্পনা সরকারের নেই।