ঢাবিতে ৪ শিক্ষার্থীকে রাতভর ছাত্রলীগের নির্যাতন

Slider জাতীয় শিক্ষা সারাদেশ

ঢাকা: নির্মম নির্যাতনে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পরও থেমে নেই ছাত্রলীগের নির্যাতন। এবার একই স্টাইলে চার শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন চলেছে তাদের ওপর। পরে তাদেরকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাত ১১টার দিকে জহুরুল হক হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগের নিয়মিত ‘গেস্টরুম’ চলছিলো। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়। সেখানে মুকিমকে প্রথমে মানসিকভাবে চাপ দেয়া হয়।
এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্টাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে তার ফোনের কললিস্ট দেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতারা। মারধর সহ্য করতে না পেরে উভয়ই মেঝেতে বসে ও শুয়ে পড়ে।

এর একটু পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন এবং একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত দুটা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন করতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতারা। রাত ২টার পর তাদের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। শাখা ছাত্রলীগ নেতা ও হল সংসদের ভিপি সাইফুল্লাহ আব্বাসী, হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমীর হামজা, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আলম, হল সভাপতি ও হল সংসদের সাহিত্য সম্পাদক কামাল উদ্দিন রানা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ইমনসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা এ ঘটনায় জড়িত বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তাদের মারধর করিনি। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা করেছি। তাদের কাছ থেকে শিবিরের দু’টি বই উদ্ধার করেছি। তবে বইয়ের ছবি ও নামের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে আমির হামজা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক তিনটার দিকে চার শিক্ষার্থীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। দুপুরের পরে তাদেরকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *