পশ্চিমবঙ্গে থাকা ৫০ লক্ষ ‘বাংলাদেশিকে’ ফেরত পাঠানো হবে: দিলীপ ঘোষ

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা


কলকাতা:পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ দুর্মুখ নেতা হিসেবে নিজেকে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এবার তার হুমকির তালিকায় যোগ হয়েছে গোলা ছোড়া ও কথিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৫০ লাখ কথিত বাংলাদেশি মুসলিমকে ফেরত পাঠানো হবে।

রোববার উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় সিএএ ও এনপিআরের সমর্থনে সভাসমাবেশে দিলীপ ঘোষ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, সরকার দেশজুড়ে এনআরসি চালু করতে বদ্ধ পরিকর। তার হুশিয়ারি, ভিন্ন সম্প্রদায়ের ৫০ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী, যারা ওপার বাংলা থেকে এ দেশে এসে ঘাঁটি গেড়েছেন, তাদের চিহ্নিত করে প্রথমে ভোটার কার্ড থেকে নাম কাটা হবে। তার পরে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।

দিলীপ ঘোষের ভাষ্য, এই মুসলিমরা সরকারের দেওয়া দু’রুপি দরে ভর্তুকির চাল হজম করে দিচ্ছে। এরাই রাজ্যজুড়ে হিংসার ঘটনায় যুক্ত। তার মতে, যারা সিএএ বিরোধী আন্দোলন করছেন তারা আসলে বাঙালি-বিরোধী এবং ভারত-ভাবনার বিরোধী।
তাই তারা হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিরোধীতা করছে।

শনিবার নন্দীগ্রামে প্রবল বাধার সম্মুখীন হলেও এদিন উত্তর ২৪ পরগণা জুড়ে উৎসাহের সঙ্গে বিজেপি অভিনন্দন যাত্রা করেছে। এই উপলক্ষে সমাবেশে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ধর্মীয় কারণে নির্যাতিত হয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীদের সমর্থন করার জন্য তাকে সাম্প্রদায়িক বললেও তার কোনও ক্ষোভ নেই। এদিন তার ভাষণে বিজেপির রাজ্যসভাপতি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে অধিকাংশ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন , তৃণমূল কংগ্রেস ৫০টি আসনও পাবে না।

এদিন সিএএ-এর সমর্থনে নৈহাটিতে এক সভায় দিলীপ ঘোষ ফের বলেছেন, যারা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট করবে, তাদের গুলি করে মারা হবে। আমরা ক্ষমতায় এলে গুলির পর গোলাও চালাবো। আমার কথা যার হজম হবে না, তিনি হোমিওপ্যাথি ওষুধ খান। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিজেপির নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’য় জড়ানোর অভিযোগ তুলে তিনি আরও হুমকি দেন, ‘‘কেস খেতে হলে পালিশ করেই কেস খাব।’’ সেই সূত্রেই দিলীপবাবু জানান, তারা ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আসেননি। এদিন তিনি ফের তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএম এবং কংগ্রেসকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়েছেন।

দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএম এবং কংগ্রেস। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, যেহেতু বিজেপির জনসমর্থন নেই, তাই শুধু গোলাগুলির সমর্থনে চলতে চাইছে ওরা। সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, দিলীপ ঘোষের মতো দুর্মুখ বিজেপি নেতারা প্রতিদিন বিষোদগার করে নিম্ন রুচির নতুন রেকর্ড গড়ছেন। যাইহোক, তিনি ঠিকই বলেছেন, তার দল এ সব পছন্দ করে। বাংলার মানুষ কিন্তু এই ঔদ্ধত্য এবং ঘৃণার শেষ দেখবেন। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, দিলীপবাবুর মনে রাখা উচিত, যিনি জিহ্বাকে সংযত করতে পারেন না, তিনি রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারেন না। আর অশালীন মন্তব্য এবং গোলাগুলি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *