টঙ্গী: স্মরণকালের বৃহৎ জুমার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হলো টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। লাখ লাখ মানুষ এই জুমার জামাতে অংশ নেন। জুমার নামাজের ইমামতি ও জুমাপূর্ব খুতবা দেন আলমি শুরার সদস্য ও কাকরাইলের মুরব্বি হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের।
জুমার নামাজ শেষে ইজতেমায় আগত এক মুসল্লির মৃত্যুতে জানাজার নামাজও অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত মুসল্লিরা শৃঙ্খলার সঙ্গে নামাজে শরিক হন।
জুমার জামায়াতের সারি মাঠের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। ইজতেমা মাঠের বাইরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছিল মুসল্লিদের ভিড়। আশপাশের সড়ক ও স্থাপনাগুলো দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা বৃহৎ এই জামাতে শরিক হন। স্থানীয় মসজিদগুলোও ছিলো মুসল্লিদের দ্বারা পরিপূর্ণ।
জুমার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে শুক্রবার ভোর থেকেই ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিদের ভিড় বাড়ে।
ময়দান অভিমুখে হাতে জায়নামাজ ও টুপি মাথায় মুসল্লিদের জনস্রোত দেখা গেছে।
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আমবয়ান করেন রায়বেন্ডের মুরব্বি মাওলানা উবাইদুল্লাহ খুরশীদ। এর পর সকাল ১০টায় স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির ছাত্র-শিক্ষক এবং অন্য পেশাজীবীদের উদ্দেশে বিশেষ বয়ান হয়।
ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানিয়েছেন, অন্যবারের তুলনায় এবারের ইজতেমায় মুসল্লির সংখ্যা বেশি। ইজতেমা মাঠের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে নতুন ১৪টি খিত্তা (নির্ধারিত স্থান) যুক্ত করার মাধ্যমে মাঠের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আর পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এর পরও জায়গা না পাওয়ায় ময়দানের বাইরে রাস্তায় অবস্থান করছেন মুসল্লিরা।
আর মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি ভবনে আছে ৮ হাজার ৩৩১টি শৌচাগার। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে পানি। তিনটি গ্রিড থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে মাঠে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়েছে।
রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ময়দানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা তিন দিন করে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ জানুয়ারি শুরু হবে সা’দ অনুসারীদের ইজতেমা। ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২০ সালের দুই গ্রুপের দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।