মোঃ জাাকরিয়া, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার যাত্রী ফোরাম ঢাকা-গাজীপুর ও যাত্রী কমিউনিটি নামে দুটি সংগঠন এই কর্মসূচি শুরু করে।
যাত্রী কমিউনিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সামসুল হক ও যাত্রী ফোরাম ঢাকা-গাজীপুর এর সভাপতি জনাব তানিম গণস্বাক্ষর অভিযানে নেতৃত্বে দিচ্ছেন।
সংগঠন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ জন গণস্বাক্ষর অভিযানে স্বাক্ষর দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত আগামী ১০ জানুয়ারী থেকে ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল করা হয়েছে মর্মে খবর এসেছে। এর আগে ৮টি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ছিল না জয়দেবপুর জংশনে। সর্বশেষ তিনিট আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল হওয়ায় এই রুটে চলাচলকারী ২১টি আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে জয়দেবপুর জংশনে ১১টি আন্তঃনগর ট্রেনই থামবে না। এই নিয়ে গতকাল প্রথম গ্রামবাংলানিউজ সচিত্র সংবাদ দেয়।
পাঠকদের জন্য সংবাদটি পুনরায় দেয়া হল।
জয়দেবপুর জংশনে একাধিক আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল নিয়ে হৈ চৈ
গাজীপুর: ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটে চলাচলকারী একাধিক আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ১০ জানুয়ারী থেকে যাত্রাবিরতি বাতিল হলে যাত্রী সেবা নিয়ে নানামুখী প্রশ্ন ও উত্তেজনা দেখা দিতে পারে বলে আশংকা দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই রুটে প্রতিদিন ৬৮/৭০ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করে। এর মধ্যে ২১ জোড়া ট্রেন আন্তঃনগর। ২১ জোড়া ট্রেনের মধ্যে ৮ জোড়া ট্রেন জয়দেবপুর জংশনে থামে না। নির্ধারিত যাত্রাবিরতি না থাকায় ওই ট্রেনগুলোর জয়দেবপুর জংশন হওয়া সত্বেও যাত্রাবিরতি ছিল না। নতুন করে ১০ জানুয়ারী থেকে তিনটি ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল হতে পারে বলে খবর পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে আন্তঃনগর দ্রুতযান ও একতা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি ঢাকায় ফেরার পথে জয়দেবপুর জংশনে যাত্রাবিরতি করত। কিন্তু ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় জয়দেবপুর জংশনে থামত না। আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটির ঢাকায় যাওয়া আসার পথে জয়দেবপুর জংশনে যাতাবিরতি ছিল। কিন্তু ১০ জানুয়ারী থেকে চিত্রার জয়দেবপুর ষ্টেশনে আর কোন স্টপেজ নেই। ১০ জানুয়ারী থেকে নতুন করে আন্তঃনগর ট্রেনের আরো যাত্রাবিরতি বাতিল হলে ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটের জয়দেবপুর জংশনে ২১ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে ১১ জোড়া ট্রেনেরই যাত্রাবিরতি থাকবে না।
রেলওয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটের জয়দেবপুর জংশনে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ভাড়া বাবদ প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হয়। দুটি ঈদ ও বিশ্ব ইজতেমা ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ্যে যাত্রাী বেড়ে যাওয়ায় বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার উপরে আয় হয়। ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটে প্রতিদিন ৮/১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন।
এদিকে রাজধানী ঢাকার কুল ঘেঁষে অবস্থিত গাজীপুর জেলাকে শিল্পরাজধানী হিসেবে ধরে নেয়ায় বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলার কম-বেশী লোক কর্মের প্রয়োজনে গাজীপুরে বসবাস করেন। ঢাকায় অফিস করেন এমন বহু লোক গাজীেপুরে বসবাস করে নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করেন। ঢাকায় ব্যবসা বানিজ্য করেন এমন অনেক লোক গাজীপুরে বসবাস করেন এবং গাজীপুরে অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থাকায় রাজধানী ঢাকার অনেক মানুষ গাজীপুরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন।
ভৌগোলিক কারণে গাজীপুর নদী- প্রকৃতি বেষ্টিত ও ফাঁকা জায়গা হওয়ায় বসবাস করে মানুষ অনেকটা স্বস্তি পায়। ফলে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত অনেক কর্মজীবী মানুষের পরিবার পরিজন গাজীপুরে থাকেন।
এই অবস্থায় ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটে আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রা বাতিল হলে হাজার হাজার মানুষ কঠিন বিড়ম্বনায় পড়বে এতে সন্দেহ নেই।
একটি গোপন সূত্র জানায়, ঢাকা-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন বাস কোম্পানীর তদ্বিরে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল হতে পারে। এ ছাড়া গাজীপুরের স্থানীয় রাজনীতির বিরোধের জেরেও এই ধরণের মন্দ সিদ্ধান্ত আসছে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
আওয়ামীলীগের একটি দলীয় সূত্র জানায়, আন্তঃনগ ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি বাতিলের খবরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল যাত্রাবিরতি বাতিল না করতে অনুরোধ করে মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলেে চিঠির কপি পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের প্রধান ষ্টেশন মাষ্টার মোঃ শহিদুল ইসলাম কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
নিউজ লিংক
জয়দেবপুর জংশনে একাধিক আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল নিয়ে হৈ চৈ