নাগরিকপঞ্জির পর ভারতব্যাপী আসছে জনসংখ্যাপঞ্জি

Slider জাতীয় সারাবিশ্ব

ডেস্ক: নতুন আদমশুমারি ও জনসংখ্যা জরিপের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে সম্মত হয়েছে ভারতের মন্ত্রীসভা। আগামী বছরই এই আদমশুমারি বা জনগণনা ও জরিপ শুরু হবে। সম্প্রতি পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ সত্ত্বেও নতুন এই পদক্ষেপ নিলো ভারত সরকার। সমালোচকরা বলছেন, সংশোধিত ওই নাগরিকত্ব বিল মুসলিম-বিরোধী। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
জনসংখ্যাপঞ্জি কী?

কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের প্রত্যেক সাধারণ বাসিন্দার পরিচয় সহ ডাটাবেজ তৈরি করাই এনপিআর বা জনসংখ্যাপঞ্জির উদ্দেশ্য। সাধারণ বাসিন্দা হলেন তারা, যারা কোনো একটি এলাকায় ৬ মাস বসবাস করেছেন বা বসবাস করার চিন্তা করছেন। অর্থাৎ, ভারতে বসবাসরত বিদেশীরাও এই এনপিআর-এ অন্তর্ভুক্ত হবেন।

মঙ্গলবার মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার বলেন, সরকার দেশব্যাপী এই জনসংখ্যাপঞ্জি পরিচালনা করতে ৩৯৪০ কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকা হালনাগাদ হবে। অপরদিকে আদমশুমারি বা জনগণনার জন্য ব্যয় করা হবে ৮৭৫৪ কোটি রুপি।

আদমশুমারির মাধ্যমে জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, অভিবাসন, জনতত্ত্ব হিসাব করা হবে। জাভাদেকার বলেন, ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো এনপিআর বা জনসংখ্যাপঞ্জি করা হয়। ২০১৫ সালে এটি হালনাগাদ করা হয়। তিনি বলেন, উপাত্ত ভালো হলে সরকার উন্নততর নীতিমালা হাতে নিতে পারে। কিন্তু সমালোচকরা মনে করেন, জনসংখ্যাপঞ্জি হলো বিতর্কিত নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তৈরি করার প্রথম পদক্ষেপ। জনসংখ্যাপঞ্জি হবে নাগরিকদের তালিকা। এটির পক্ষে রয়েছে শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। নাগরিকপঞ্জি ইতিমধ্যেই আসাম রাজ্য বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেখানকার জনগণকে প্রমাণ করতে হয়েছে তারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগ থেকে সেখানে বসবাস করছেন। সেখানে নাগরিকপঞ্জি বাস্তবায়ন করায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন। তবে ভারতের অন্যত্র নাগরিকপঞ্জি বাস্তবায়ন করতে হলে, নিজের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে কী কী নথিপত্র লাগবে, সেই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো ¯পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হয়েছে এ মাসের শুরুতে। সমালোচকরা বলছেন, এই আইনের লক্ষ্যবস্তু ভারতের ২০ কোটি মুসলমান। এই আইনের মাধ্যমে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের অমুসলিম অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। সরকার বলছে, ওই তিন দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা প্রদানের জন্যই আইন সংশোধন করা হয়েছে। তবে বিরোধী দল ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এই আইন বৈষম্য সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের মর্যাদাকে ক্ষুণœ করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই আইনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি অবশ্য বলছেন, ভারতের মুসলিমদের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে এই আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশি নিষেধাজ্ঞা ও ইন্টারনেট বন্ধ হলেও প্রতিবাদ বন্ধ হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *