রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: এবার ছাত্রের মাথা ফাটাল হাত ভাঙল ছাত্রলীগ

Slider জাতীয় রাজনীতি রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদকে কক্ষে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সোহরাব মিয়া নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছেন ছাত্রলীগকর্মীরা। মারধরে সোহরাবের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে বাঁ হাত। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। গত শুক্রবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলের ২৫৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। সোহরাব ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মারধরকারী দুই ছাত্রলীগকর্মী হলেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবীর নাহিদ। তাঁরা ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।

এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে গতকাল শনিবার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক আটকিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোহরাবের সহপাঠীরা জানান, গত শুক্রবার রাতে সোহরাব তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে হলের ছাদে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় আসিফ ও নাহিদ ছাদে গিয়ে তাঁকে ২৫৪ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে আসেন। এ সময় আসিফের ল্যাপটপ চুরি হওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার ছুতা তুলে নাহিদ রড দিয়ে সোহরাবের পিঠে আঘাত করেন। পরে আসিফ রড দিয়ে সোহরাবের মাথায় আঘাত করলে জ্ঞান হারান সোহরাব। এর পরও তাঁরা দুজন মিলে সোহরাবকে পেটাতে থাকেন। খবর পেয়ে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে রাবির প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং পরে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সহপাঠীরা জানান, সোহরাবের মাথার তিন স্থানে ১৫টি সেলাই লেগেছে। বাঁ হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায়ও ভেঙে গেছে।

তবে মারধরের বিষয়ে আসিফ লাক বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে সোহরাবের সঙ্গে আদিত্য ও সোহান নামের দুই বহিরাগত হলে আসা-যাওয়া করছিল। শুক্রবার রাতে তারা মাদক সেবনের জন্য হলের ছাদে ওঠে। দু-এক দিন আগে আমার ল্যাপটপ চুরি হয়। সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডেকে নিয়ে আসি। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে সোহরাবের মাথা ফেটে যায়। পরে আমি নিজেই তাকে হাসপাতালে নিতে গেলে তার সহপাঠীরা আমাকে মারধর করে।’ নাহিদের বক্তব্য জানতে তাঁকে ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক আবু সাদেক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আজ (শনিবার) রাতের মধ্যেই দোষীদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে। ছাত্রত্ব বাতিলের বিষয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে। সোহরাবের চিকিৎসা খরচ প্রশাসন বহন করবে।

এদিকে ঘটনা খতিয়ে দেখতে হল প্রশাসন ও রাবি ছাত্রলীগ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। হল প্রাধ্যক্ষ ড. জুলকার নায়েন বলেন, এরই মধ্যে আসিফ ও নাহিদের হলের সিট বাতিল করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *