বুলবুল : সারা দেশে লঞ্চ-ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান বন্ধ

Slider জাতীয় সারাদেশ


ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। প্রচন্ড ঢেউ ও প্রবল বাতাসের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে দেশের সব নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। এর আগেই বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বয়ে চলা ঝড়-বৃষ্টি কমলে নৌযান চলাচল ফের শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।

পাটুরিয়া ঘাট শাখার ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম জিল্লুর রহমান ফেরি চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হঠাত করে মাঝ পদ্মায় প্রচন্ড ঢেউ ও বাতাসের কারণে ফেরি চলাচল করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ফেরির মাস্টারদের। যার কারণে রাত ১০টা থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে সব ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। উভয় ঘাটে নিরাপদে ফেরিগুলো নোঙর করা হয়েছে। এছাড়া পারাপারের জন্য পাটুরিয়া ঘাটে ২০টি যাত্রীবাহী পরিবহন ও ৫০টি পণ্যবোঝাই ট্রাক আছে।

এদিকে আজ ভোরে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন ও খুলনা উপকূল অতিক্রম করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’।

আজ রবিবার সকাল আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রভাগ খুলনা জেলার সুন্দরবনে অবস্থান করলেও এর আশপাশের এলাকায় প্রবল শক্তিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এর আগে ভোর ৫ টায় এটি খুলনা ও বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত হানে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে ঘূর্ণিঝড়টির বিষয়ে জানানো হয়, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো নয় নম্বর মহবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া বুলবুল অতিক্রমের সময় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এসব এলাকার নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমশঃ দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কোথাও কোথাও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *