দাবি আদায়ে অনড় শিক্ষার্থীরা, অবস্থান কর্মসূচি পঞ্চম দিনে

Slider শিক্ষা

ঢাকা:শুক্রবার সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে টানা পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার সকালে আবরার হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি আদায়ে তারা অনড় থাকবেন। উপাচার্যের কথা আশ্বস্ত না হলে সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।

এ সময় আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনাকে কোনও ব্যক্তি বা দলের স্বার্থের এজেন্ডা হিসেবে ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান।

আন্দোলনের কারণে পাঁচদিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বুয়েটে।

শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত হয়ে জবাবদিহি করা ও দাবি মানার আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে এ আহ্বান জানিয়ে ওইদিন এই সময়ের মধ্যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে না এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের ওই ঘোষণার বৃহস্পতিবার রাতেই উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব কামরুল হাসান জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল ৫টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন উপাচার্য। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি অনুসারে, সবার সঙ্গে নয়, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

আবরার হত্যার বিচারসহ বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবির কথা আবারও তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- খুনিদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন, মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীন স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি, অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ প্রদান এবং বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আবরারের মতো নিরীহ একজন ছাত্র নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর ভিসি যথাসময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি। ৩৮ ঘণ্টা পর তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাজির হন। কিন্তু কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তাই শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে হাজির হয়ে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।

তারা জানান, আবাসিক হলগুলোতে র‌্যাগ-এর নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার, নিরাপত্তার জন্য সব হলের উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা বসানো এবং হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে শেষেরটি এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে। শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল খান গত বুধবারই পদত্যাগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে তারা ছাত্র রাজনীতি নয়, ক্যাম্পাসে কেবল ‘সংগঠনভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন বলে জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দাবির বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন উল্লেখ করে এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

এদিন সবশেষে বিকেল ৪টার দিকে দিনের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার সকাল থেকে পুনরায় আন্দোলনে নামার কথাও বলেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *