বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি বন্ধসহ ১০ দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা
ঢাকা:আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন তারা। সকাল থেকে বুয়েটের শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে তারা ‘খুনিদের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘বহিষ্কার বহিষ্কার, খুনিদের বহিষ্কার’, ‘এক আবরার কবরে, লক্ষ আবরার বাহিরে’, ‘যাব না, যাব না, ফাঁসি ছাড়া যাব না’– এমন বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিন অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি বন্ধসহ তাদের ১০ দফা দাবি নিয়ে শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম তাদের সঙ্গে কথা না বললে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে তারা ঝুলিয়ে দেবেন। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষাসহ সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষাও বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের কারণে বর্তমানে বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা যে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সেগুলো হচ্ছে– আবরারের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার করা; আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করা; মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীন স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করা; অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ দেওয়া; বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা; ঘটনার পর ভিসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হওয়া এবং ৩৮ ঘণ্টা পর গিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার কারণ দুপুর ২টার মধ্যে (বুধবার) শিক্ষার্থীদের কাছে জানানো; আবাসিক হলগুলোতে র্যাগিংয়ের নামে এবং ভিন্নমত দমনে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা; এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা ও নিরাপত্তার জন্য সব হলের উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা বসানো এবং ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করা।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুধবার বুয়েটের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেন।
গত রোববার রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে চকবাজার থানা পুলিশ। ওই রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা পিটিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত ১১ নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।