রংপুর ৩ উপনির্বাচনে ভোটার কম, তাই অলস সময় পার করছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা রংপুর

রংপুর: রংপুর ৩ (সদর) আসনে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। তবে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কম হওয়ায় নির্বাচনী কর্মকর্তারা অলস সময় পার করছেন। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে তেমন আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে না। সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ নগরীর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রসহ কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তবে স্থানীয় ভোটার না হওয়ায় তিনি ভোট দিতে পারেননি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে। যদিও ভোটার উপস্থিতি কম। জয়ের ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ভোটারদের মাঝে যে সাড়া পেয়েছি তাতে জয়লাভের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। এ সময় জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরসহ দলের নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।

অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান নগরীর রাধাবল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রসহ কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। রংপুর ৩ আসনের ভোটার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি জানান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ নির্বাচনী এলাকার ভোটার হবেন তিনি। নির্বাচন সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে খলেয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। পুলিশি হয়রানির ভয়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা তো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো না। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না উল্লেখ করে তিনি অনিয়মের আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এদিকে প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ভাতিজা স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) মাধ্যমে ভোটা হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম। তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেন।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর ৩ আসনে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা ১২টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে তেমন ভোটার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি। ভোট চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ৮০০। বেলা সোয়া ১১টায় ভোট পড়েছে মাত্র ১২০টি। প্রিসাইডিং অফিসার রাফিউল আলম বলেন, ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবে দুপুরের পর বাড়তে পারে। একই ইউনিয়নের পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১১টা পর্যন্ত ১০৫ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। তার মধ্যে নারী ভোটার মাত্র তিনজন। প্রিসাইডিং অফিসার এ কে এম গোলাম ফারুক জানান, এই কেন্দ্রের আওতায় মোট ভোটার দুই হাজার ৬০০।

খলেয়া ইউনিয়নের দনতোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ভোটার এক হাজার ৭৪৮। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ১৬৬ জন। তার মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ৩৫ জন। প্রিসাইডিং অফিসার রাশেদুল হক আশা প্রকাশ করেন বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। একই ইউনিয়নের পূর্ব খলেয়া উপর তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সোয়া ১২টায় ভোট পড়েছে ২৪৯টি। যার মধ্যে নারী ভোটার ৬৮ জন। প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ সরকার জানান, ওই কেন্দ্রে ভোটার আছে মোট দুই হাজার ২১৩ জন। তবে বেশির ভাগ কেন্দ্রে আলোচিত তিন প্রাথী সাদ এরশাদ, রিটা রহমান ও আসিফ ছাড়া অন্য প্রার্থীদের এজেন্টকে পাওয়া যায়নি।

একই ধরনের অবস্থা দেখা যায় সিটি করপোরেশনের সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেল্লাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর্ডার গার্ড উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রংপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তবে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলে ভোটকেন্দ্রগুলোতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।

এ নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ (লাঙল), বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি), এনপিপির শফিউল আলম (আম), গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ বায়েজিদ (মাছ) এবং খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেয়াল ঘড়ি)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *