♦ একজন পিতা হাবিল ফকির ও আমি

Slider সাহিত্য ও সাংস্কৃতি


ঢাকা: বাসায় এসে ছেলেটার বুকে ব্যাথার কথা শুনে চমকে উঠলাম। স্কুলেও যায়নি। ব্যাথার সাথে স্কুল ফাঁকির সম্পর্ক খুঁজতেছিলাম। ভাবলাম বিকেলে ডাঃ দেখাবো। ছেলের মাথার চুল বড় হয়েছে তাই ছেলেকে নিয়ে নাপিতের দোকানে এবং আর্মি কাটিং। এরপর ডাঃ এর সিরিয়াল দেয়ার জন্য চেম্বারে।সিরিয়াল দিয়ে ছেলের ইচ্ছা হলো ডাব খাবে। ডাব খাওয়ার পর সিঙ্গারার আবদার। চলে গেলাম মুন্সীপাড়া রোডের মোড়ে। অতি সুস্বাদু সিঙ্গারা ও পুরি মাত্র তিনটাকা পিস। বাপছেলে মিলে কয়টা খেয়েছি তার হিসেব মেলাতে পারিনি। হিসাব মেলাতে পারলামনা দোকানীর জীবনের। পঙ্গু দুইছেলে সহ ছয় সদস্যের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। ৬৯ বয়সী এই মানুষটিও নানাবিধ ব্যাধীতে আক্রান্ত। আমাকে যখন সিঙ্গারা দিচ্ছিলেন তখন উঁনার হাত কাঁপছিলো। বিশ বছর আগে গাইবান্ধা থেকে চলে আসা জীবন সংগ্রামী এই মানুষটি আর কতোদিন চালাতে পারবেন তাঁর ছয় সদস্যের সংসার তা কেবল মহান আল্লাহতা’আলাই ভালো জানেন।

পাদটীকাঃ সিঙ্গারা আর পুরির হিসেব মিলাতে পারলামনা কোনভাবেই। অবশেষে হাবিল ফকির আমার ছেলের মাথায় হাতবুলিয়ে ওর হাতে কিছু পুরি ধরিয়ে দিয়ে হিসাবটা মিলিয়ে দিলেন। সিঙ্গারা ও পুরির দাম দেয়ার সাহস আমার হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *