কাজ না থাকায় কারখানা বন্ধ: বিপাকে প্রায় ৭’শত শ্রমিক

Slider গ্রাম বাংলা

রাতুল মন্ডল শ্রীপুর: দেশের পোশাক শিল্প রপ্তানী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাম ডাক রয়েছে এলিগ্যান্ট গ্রুপের। এই গ্রুপের পোশাক রপ্তানী কারখানা গুলোতে শান্তিপূর্ণ ভাবে শ্রমিকরা কাজ করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তবে এই গ্রুপে ভিন্ন চিত্রও দেখা মিলে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেপিরবাড়ি গ্রামের অবস্থিত এলিগ্যান্ট গ্রুপের ‘ক্যাসিওপিয়া ড্রেস লিমিটেড’ কারখানায় কিছু দিন পর পর ব্যাপক শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন কিছু পরিশোধ করে আবার কারখানার উৎপাদন শুরু হয়েছে এমন অনেক ঘটনার স্বাক্ষী শ্রমিকরা।
অবশেষে কারখানাটি চালাতে ব্যর্থ হয়ে এলিগ্যান্ট গ্রুপ।

ঈদুল ফিতরের ছুটি মধ্যে হঠাৎ কারাখানার মূল ফটকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধের নোটিশ সাটিয়ে দেয়।

ঈদের ছুটির পর শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে কারখানায় কাজ করতে এলে কারখানার অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এসময় কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের কয়েকজন কর্মকর্তা এসে উপস্থিত হয়। এসময় তাঁরা শ্রমিকদের কাছ থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সময় নেয়। এরপর বিজিএমইএ’র পরিচালক মো.রেজওয়ান সেলিমের সভাপতিত্বে বিজিএমইএ’র ঢাকা অফিসে সমঝোতা সভা শুরু হয়। এতে যোগ দেয়, কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিকদের প্রতিনিধিসহ সরকারী বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সভায় শ্রম আইনে শ্রমিকদের সকল পাওয়া বুঝিয়ে দেয়ার শর্ত দিয়ে কারখানা স্থায়ী ভাবে বন্ধের নিদের্শনা দেয়া হয়।

কৌশলে ঈদের ছুটির মধ্যে ইচ্ছে করে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেয়ার পেছনে শ্রমিকরা তাদের অধিকার না পাওয়ার ষড়যন্ত্র দেখছেন বলে জানিয়ে রাবেয়া খাতুন, মিতা আক্তার, মো.রহিম মিয়াসহ বিভিন্ন শ্রমিকরা বলেন, কারখানা থেকে প্রতি মাসের ২০ তারিখের পরে আমরা বেতন ভাতা তুলতাম। অর্জিত ছুটির টাকা কখনো দেয়নি। ঈদের বোনাস নিয়েও নানা কৌশল করতো। এক কথায় শ্রমিকদের ঠকিয়ে এই কারখানা পরিচালনা করা হতো।
তারা আরো বলেন, বিজিএমইএ আমাদের যে সিন্ধান্ত দিয়েছে আমরা মেনে নিয়েছি। তবে এতো গুলো শ্রমিক এখন হঠাৎ করে কোথায় চাকুরি পাবে? আমাদের সংসার চালাতে এমনিতেই অনেক কষ্ট হয়। এখন বিভিন্ন কারখানার দরজায় দরজায় ঘুরতে হবে। শ্রমিকদের দুঃখ কেউ বুঝলো না।
তবে এবিষয়টি শ্রমিকদের ভুল ধারণা বলে এলিগ্যান্ট গ্রুপের প্রশাসনিক প্রধান মো.হাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশী ভায়াররা পোশাক তৈরির যে দাম দেয়, ওই দামে কারখানা চালিয়ে শ্রমিকদের বেতনভাতা দিয়ে একটি পোশাক কারখানা চলতে পারে না। এ কারণে প্রতিবছর ভর্তুকি দিয়ে কারখানা পরিচালনা করা হচ্ছিল। অবশেষে এলিগ্যান্ট গ্রুপের পক্ষ কারখানাটি চালাতে না পাড়ায় আমরা স্থায়ী বন্ধের সিন্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, তবে শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী সকল দাবি দাওয়া পরিশোধ করে দেয়া হবে।
শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.লিয়াকত আলী বলেন, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায় করেছে। এরপরও যদি শ্রমিকরা কারখানা থেকে তাদের অধিকার আদায়ে বি ত হয়। আমাদের কাছে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *