ডেঙ্গু বাস্তবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে

Slider টপ নিউজ সারাদেশ


ডেস্ক: ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এডিস মশার হাত থেকে বাঁচতে দেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সবাইকে একযোগে মাঠে নামতে হবে। তা না-হলে মন্ত্রী-এমপি কেউই রেহাই পাবেন না। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মী অনেকের মাঠে না নামার তথ্য তার কাছে রয়েছে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় দলটির এক বিশেষ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা সিটিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

আমরা যতই মুখে নিয়ন্ত্রণের কথা বলি না কেন, এখনও এটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বাস্তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এডিস মশা ভয়ঙ্কর। এই এডিস মশা কারও চেহারার দিকে তাকায় না, আপনি কাউন্সিলর, আপনি কি নেতা, আপনি কি মন্ত্রী, এমপি, মেয়র কোনও দিকেই তাকাবে না। এডিস মশা সামনে পেলেই রক্ত খাবে।
এমপি’র রক্ত খাবে, মন্ত্রীর রক্ত খাবে, নেতার রক্ত খাবে, কাউন্সিলরের রক্ত খাবে, কাউকে ছাড়বে না। সাংবাদিকদেরও রেহাই নেই। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে, সাবধান হতে হবে। আমাদের যে করণীয় তা পালন করতে হবে। ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ-ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ’, এই কথা শুধু মুখে নয় অ্যাকশনেও বাস্তবায়ন করতে হবে। ১০৯ কউন্সিলরের মাত্র ১৩ জন কাজ করেছেন। ঢাকার ১০৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে কয়জন কাউন্সিলর ও কয়টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী যথাযথভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় মাঠে নেমেছেন? আমি চিহ্নিত করে লজ্জা দিতে চাই না। শুধু বলতে চাই, কমিটমেন্ট থেকে কাজটা করেন।

শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে করতে হবে। যারা করেছেন তাদের ধন্যবাদ, আর এই ধন্যবাদ অব্যাহত থাকবে। যারা করেননি নেত্রী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রোগ্রাম না করলে কিন্তু অপ্রকাশিত থাকবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ফটোসেশন করার জন্য এই অভিযান নয়। আমরা দেখতে চাই, ঢাকা সিটির প্রত্যেক ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। নেত্রী এটা জানতে চেয়েছেন। নেত্রী জানতে চেয়েছেন, কয়টা ওয়ার্ডে তার নির্দেশনা পালন হয়েছে। কতজন নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেমেছেন, জানতে চাইলে সভায় ১৩ জন হাত উঁচু করেন। এ সময় তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন। মিডিয়া না থাকলে ডেঙ্গুকে গুজব বলে চালিয়ে দিতো সরকার’ বিএনপির এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বলবো মিডিয়া না থাকলে বিএনপি যে একটা রাজনৈতিক দল এর অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন হতো। ডেঙ্গু অভিযানেও তারা নেই। তারা শুধু মুখে মুখে আবাসিক প্রতিনিধি পল্টনের অফিসে বসে কথা বলছেন। মিডিয়া না থাকলে আজকে জনগণ কীভাবে বুঝতো এই দল যে আছে? এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে কর্মসূচি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি।

জনস্বার্থে, দেশের স্বার্থে এবং দলের স্বার্থে নেত্রীর নির্দেশনায় এই কাজটি আমরা করবো। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বে নোংরা শহরের মধ্যে আমরা চার নম্বরে। তাহলে কেন এডিস মশার প্রজনন হবে না। কেন বংশ বিস্তার হবে না। আরও অনেক ভয়ঙ্কর চিকুনগুনিয়ার মতো ব্যধিতে অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। ঢাকাকে ক্লিন করতে হবে, ঢাকাকে গ্রিন করতে হবে। আমাদের এবং প্রতিনিধিদের যৌথভাবে মাঠে নামতে হবে। বিশেষ সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সব সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ-এর অন্তর্গত সব থানা এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সব দলীয় কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ দলীয় ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত সব সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। জরুরি এ সভায় অন্যদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ,সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এনামুল হক শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *