ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগপত্র গ্রহণ হবে কি-না এ বিষয়ে শুনানি হবে আগামী ৯ জুলাই।
বৃহস্পতিবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম মো. জাকির হোসেনের আদালত থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার যৌন হয়রানির মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।
ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ১০ পৃষ্ঠার দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে একমাত্র আসামি সিরাজ-উদ-দৌলা।
বৃহস্পতিবার সকালে শুনানির পর আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রেরণ করেন।
ওই আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ আগামী ৯ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন।
বিচারক জাকির হোসাইনের আদালতে শুনানিতে বাদী পক্ষে অ্যাড. এম শাহজাহান সাজু ও আসামি পক্ষে অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন খান নয়ন অংশ নেন।
এদিকে এই হত্যা মামলার স্বাক্ষী সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রহরি মো. মোস্তফার স্বাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাক্ষ্য শেষে আসামি পক্ষের ১৬ আইনজীবী তাকে জেরা করেছেন। সকাল ৯টায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে মামলার ১৬ আসামিকে জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
সকাল সাড়ে ১১টায় তাদের ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এর আদালতে হাজির করা হয়। আগামী রবিবার পর্যন্ত আদালত মুলতবি রাখা হয়েছে। রবিবার স্বাক্ষ্য ও জেরা হওয়ার কথা রয়েছে মামলার স্বাক্ষী কেরোসিন বিক্রেতা জসিম উদ্দিন, বোরকা বিক্রেতা লিটন ও দোকানের কর্মচারী ফরহাদের।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ আনেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করে নুসরাত।
পরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিবিআই ৯৬ দিনের মাথায় বুধবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানিকালে সিরাজ-উদ-দৌলা আদালতে হাজির ছিলেন।