ট্যাঙ্কারে হামলাকে কেন্দ্র করে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা

Slider টপ নিউজ সারাবিশ্ব


ডেস্ক: ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় আবার উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। ইরানের এই প্রত্যাখ্যান করাকে আবার উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসল সত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। আর তড়িঘড়ি করে কারো ঘাড়ে দোষ চাপানোর বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। সব কিছু মিলে এক জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাঙ্কারে হামলার দায় ইরান অস্বীকার করলেও তা মানতে নারাজ ট্রাম্প।
এক্ষেত্রে তিনি প্রাপ্ত ফুটেজ উদ্ধৃত করেছেন। ওই ফুটেজে দেখানো হয়েছে, ইরানি বাহিনী একটি ছোট বোটে করে অবিস্ফোরিত মাইন বহন করছে। ওই মাইনই ট্যাঙ্কারে ছোড়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।

এর এক মাস আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলে চারটি তেলবাহী ট্যাঙ্কারে হামলা হয়। তাতে ট্যাঙ্কারগুলোর বেশ ক্ষতি হয়। ওই হামলার জন্যও ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তারা এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয় নি। এ অভিযোগও ইরান প্রত্যাখ্যান করেছিল। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসেন ট্রাম্প। তারপর থেকেই ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইরানের সঙ্গে করা ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেন তিনি। নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করেন। তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ওই চুক্তিতে ইউরোপ সহ অন্যান্য অংশীদাররা।

কি বলেছেন ট্রাম্প
সর্বশেষ ওমান উপকূলে হামলার জবাবে ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেছেন, এই হামলা করেছে ইরান। আমি মনে করি একটি মাইন বিস্ফোরিত হয় নি। সম্ভবত এর সবটাই ঘটিয়েছে ইরান। আপনি দেখে থাকবেন রাতের বেলায় বোটটি মাইন অপসারণের চেষ্টা করেছে এবং তারা বোট থেকে মাইনটি সফলতার সঙ্গে নামিয়ে দিতে পেরেছে। সেটাই বিস্ফোরিত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিশ্ববাজারে যে তেল সরবরাহ দেয়া হয় তার এক তৃতীয়াংশ যায় ঐতিহাসিক হরমুজ প্রণালী দিয়ে। এই প্রণালীটি ইরান উপকূল দিয়ে অতিক্রম করেছে। অনেকবারই ইরান হুমকি দিয়েছে এই প্রণালীটি বন্ধ করে দেয়ার। যদি তারা তাতে সফলতা পায় তাহলে বিশ্ববাজারে তেল সরবরাহে বিশাল এক ঘাটতি সৃষ্টি হবে। আর তাতে দাম বেড়ে যাবে ভয়াবহভাবে। কিন্তু এই প্রণালী ইরান বন্ধ করে দেবে বলে মনে করেন না ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যদি ইরান তা করে তাহলে সেই অচলাবস্থা দীর্ঘমেয়াদী হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, এ হামলায় যে ধরনের বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন এবং সাম্প্রতিক সময়ে শিপিংয়ে ইরান একই রকম যেসব হামলা করেছে, তা থেকে স্পষ্ট হয় যে, এই হামলা করেছে তারা। মাইক পম্পেওর এমন বক্তব্যের পর এ বিষয়ে নিজে মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ঐকমত গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান।

ইরানের জবাব কি
যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যের জবাবে শুক্রবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ওমান উপসাগরে ওই হামলার প্রসঙ্গ সরাসরি উল্লেখ না করলেও তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতায় ভয়াবহ হুমকি হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি এ সময় ২০১৫ সালে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তিতে থাকা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ টুইটারে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারা অকাট্য প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ আনছে। এর উদ্দেশ্য হলো কূটনৈতিক স্যাবোটাজ সৃষ্টি করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *