অজানা গাছ থেকে বৃষ্টির মত টিপ টিপ করে পানি ঝড়ছে!

Slider টপ নিউজ

দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর ফরেস্ট বিটের ভিতরে নাম না জানা এক গাছ থেকে সার্বক্ষণিক বৃষ্টির মত টিপ টিপ করে পানি ঝড়ছে।

আর এ দৃশ্যটি এক নজর দেখার জন্য প্রতিনিয়ত উৎসুক জনতা ভিড় করছে। অনেকে মনে করছেন, গাছ থেকে এভাবে পানি ঝড়ে পড়া সৃষ্টিকর্তার বড় কুদরত। অনেকে আবার গাছটির পানি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।

তাদের ধারণা, এ গাছের পানি সেবনে জটিল ও কঠিন রোগ আরোগ্য হবে। এছাড়া গাছটির পানি পান করা একটি ভাগ্যের ব্যাপার বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
বিরল উপজেলার কালিয়াগঞ্জ বাজার থেকে কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে সীমান্তবর্তী গোবরার বিল এলাকার ধর্মপুর শালবনের ধুলাপাথার (সাতদাগ) গভীরে দেখা মিলেছে নাম না জানা এই অদ্ভুদ উদ্ভিদটির।

তবে প্রাথমিকভাবে উদ্ভিদটি Liguminaceae গোত্রের হতে পারে বলে দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন ।
স্থানীয় আদিবাসী গোদাবাড়ী এলাকার রমজান পাহান (৩৬) জানান, জঙ্গলে গাছটি দেখেছি। ধুলাপাথারের গাছটির নিচে গেলেই পানি পড়ে। বৃষ্টি ফোঁটার মত ফোঁটায় ফোঁটায় পানি গাছের পুরো স্থান জুড়ে পড়ে।

আরেক আদিবাসী ধর্মজল এলাকার সুখি টুডু (৫০) জানান, গাছটিকে আমরা ‘শেখরেদারে’ বলে ডাকি। গাছটি থেকে পানি পড়ে তা দেখেছি। এটা অবাক করার মত বলেও জানান তিনি।

সরজমিন পরিদর্শন করে দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এমএসসির শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, গাছের নতুন কাণ্ডে পানি জমে ফেনার সৃষ্টি হতেও দেখা গেছে এবং ওই বনে আরও একই প্রজাতির গাছ থেকেও পানি ঝরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গাছটির বেড় প্রায় ৪ফিট এবং ১২ফুটের মত লম্বা, গাছটি অনেকটা ডাল পালা ছিড়িয়ে আছে। পাতাগুলো অনেকটা গোলাকার।

সরেজমিনে গাছটি পর্যবেক্ষণ করে উদ্ভিদ বিষয়ক গবেষক, লেখক ও দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানান, বর্ষাকালে অনেক গাছই অতিরিক্ত পানি শোষণ করে। এই গাছটিও বেশি পরিমাণে পানি শোষণ করে। নতুন কাণ্ড বা নতুন কুঁড়ি বের হওয়ার স্থানে পূরাতন কাণ্ড ভেদ করে বের হওয়ার ফলে উদ্ভিদটির ভাস্কুলার বান্ডেল তথা পরিবহন কলাগুলো বেরিয়ে পড়েছে। ফলে উদ্ভিদের মূল থেকে আরোহিত পানি কাণ্ডের ওই অংশ থেকে বিন্দু বিন্দু আকারে ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত পানির চাপ থাকায় ভাস্কুলার বান্ডেল তথা পরিবহন কলা কাণ্ডের ছিদ্র দিয়ে পানি বাইরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। ভ্যাপার বা বাষ্পায়ন না ঘটার ফলে গাছের নিঁচে কেউ গেলে বৃষ্টির মত ঝরা পানি অনুভব করছে।

তিনি আরও জানান, গাছটির পাতা, ডালসহ প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে বলা যাবে যে এটি কোন উদ্ভিদ। তবে প্রাথমিকভাবে তিনি জানান, উদ্ভিদটি Liguminaceae গোত্রের হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *