ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন; নামাজ ঘরে মহিলা ভোট কেন্দ্র!

Slider গ্রাম বাংলা

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে আজ প্রথমবারের মত নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে নামাজ ঘরে। এমনই এক মহিলা ভোট কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে নগরীর ১২ নং ওয়ার্ডে।

স্থানীয়ভাবে এটি পাঞ্জেগানা (জুম্মার নামাজ ব্যাতিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ) হিসেবেও পরিচিত।

নির্বাচনী ভোট কেন্দ্রের নামের পাতায় রয়েছে ইসলামিয়া মাদ্রাসা, আকুয়া সর্দার বাড়ি (অস্থায়ী কেন্দ্র)। ইতিমধ্যে কেন্দ্রটিতে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে নির্বাচন অফিস।
শনিবার এশার নামাজ শেষে খাদেম মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামান জানান, নামাজ ঘরটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়।

তবে নির্বাচনের দিন নামাজ বন্ধ থাকবে। ইমাম সাহেব ছুটিতে আছেন।
আর এ নিয়ে এখন নগর জুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে তুমুল সমালোচনা। বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। যার সবটাই নেতিবাচক।

একটি গ্রুপে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশনার কার্যালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিপুণ হোসেন নামের একজন নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘এটিই মনে হয় মসজিদ, যা ভোটের দিনে মসজিদ কমিটির অনুমতিক্রমে নামাজ বন্ধ রাখা হবে। ’

অন্য একজনের স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে আব্দুল্লাহ আল মারুফ মন্তব্য করেছেন, ‘যেহেতু এটি স্পষ্টতই ধর্মীয় দিক থেকে পবিত্র জায়গা, এখানে কুরআন শিক্ষা হয়, নিয়মিত নামাজ আদায় হয়। তাই নির্বাচন কমিশনের উচিৎ বহুদিন যাবত চলা এই কেন্দ্রকে পরিবর্তন করে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা। যা সকলে কাছেই গ্রহণীয়। ’

সরেজমিনে শনিবার রাতে ওই কেন্দ্রটিতে গেলে দেখা মেলে, পশ্চিম দিকে দুইটি ও পূর্ব দিকে দুইটি বুথ বসানো হয়েছে। রাখা হয়েছে ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন’র (ইভিএম) সকল সরঞ্জাম। পূর্ব দিকের বুথে শোবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৬ নারী আনসার সদস্য। দান বাক্সের পাশেই সিড়ির উপর বেঞ্চ পেতে বসে আছেন এক পুলিশ সদস্য। আর কেন্দ্রের সামনে ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার। বাহির থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি নামাজ ঘর।

ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার কোষাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বেগ জানান, ‘এটি এক সময় মক্তব ছিল। পরে মাদ্রাসা হয়। কিছুদিন আগে পাকা করা হয়। সব নির্বাচনেই এটি ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ভোটের দিন নামাজ বন্ধ থাকে। ’

স্থানীয় আরেক ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবারের জুম্মার নামাজ ব্যতিত সব নামাজ এখানেই হয়। সময়ের সাথে অবকাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। সব নির্বাচনে এটি কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হলেও এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন দরকার। পবিত্র স্থানে মর্যাদা সবারই রক্ষা করা উচিত। ’

তবে ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ মিঞা বলেন, ‘যেটি কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সেখানে কোনো নামাজ হয় না। মক্তব এবং মাদ্রাসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ’

আর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ফিরোজ আলম নামাজের বিষয়টি স্বীকার বলেন, ‘যেহেতু কাল (আজ রবিবার) ভোট তাই কোনো নামাজ এখানে হবে না। এটি ১২ নং ওয়ার্ডের মহিলা কেন্দ্র। চারটি বুথে মোট ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৮ জন। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *