সিলেটে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে পুলিশ

Slider সিলেট

সিলেটে বেড়াতে আসা এক দম্পতিকে হেনস্থা ও তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে মো. ওবাইদুর রহমান নামের ওই অভিযুক্ত এএসআইকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানান, অভিযুক্ত এএসআই ওবাইদুর রহমানকে ক্লোজড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, ওই টহল দলের নেতৃত্বে ছিলেন এএসআই মো. ওবাইদুর রহমান। তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত।

জানা গেছে, তাসলিমা নামের এক নারী নিজের স্বামীকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছিলেন। গত বুধবার সকালে সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকা হয়ে দক্ষিণ সুরমাস্থ কদমতলি বাস টার্মিনালে যাচ্ছিলেন তারা। পথিমধ্যে চৌহাট্টায় তাদেরকে আটকে হেনস্থা করে টহল পুলিশ।

ওই নারীর অভিযোগ, একটি সিএনজি অটোরিকশায় পাঁচজন পুলিশ সদস্য ছিলেন। চৌহাট্টায় তাদেরকে আটকে পুলিশ আলাদাভাবে জেরা করে। এসময় অপ্রীতিকর নানা প্রশ্ন করা হয়। পরে টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তাসলিমা নামের ওই নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, সিএনজি অটোরিকশায় ৫ জন পুলিশ ছিল। আমার সঙ্গে আমার সাহেব ছিল। সিএনজি অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে আমার সাহেবকে নিয়ে গেল তাদের গাড়িতে। বলতাছে আপনি একটু আমাদের সঙ্গে আসেন কথা আছে। ওরে নিয়ে গিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা শুরু। আপনার কি হয় উনি? বিয়ে হলো ক’দিন? ছেলে-মেয়ে ক’জন? কি করেন? এখানে কেন আসছেন? তখন আবার চলে গেল আমার সাহেবের কাছে। ওরেও গিয়ে একই কথা জিজ্ঞেস করা হলো কিন্তু আমার আড়ালে।

স্ট্যাটাসে তিনি আরও উল্লেখ করেন, নাস্তা না করেই গাড়িতে উঠলাম। আমার সাহেব আমার সঙ্গে একটা কথাও বলে না। ১২টা বাজে তাও কথা বলে না। আমি বারবার ওরে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি কাজ হয়নি। দুপুরে খাবার বিরতি দিল। নামলাম খাওয়ার জন্য। ওরে বললাম দেখো আমার সঙ্গে কথা বলছো না কেন? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার সঙ্গে এমনটা করো না। তখন দেখি ওর চোখ ভিজে গেছে। ও বলতাছে জানো আমাকে কি জিজ্ঞেস করেছে? আমাকে বলতাছে কত টাকায় ভাড়া করে নিয়ে আসছেন? আমার সাহেব তখন বললো দেখুন আমার বউটা খুবই ভালো পরিবারের মেয়ে আর আমিও ওরে খুবই যত্ন আর সম্মানে রাখি, আমাকে যা খুশি বলেন আমার বউটাকে নিয়ে কিছু বলবেন না। আমি ঘুরতে পছন্দ করি। আমার ছেলে ইন্টারে পড়ে। এখন আমাকে কাবিননামা নিয়ে ঘুরতে হবে। আমি আর কি লিখবো? তবে মরে গেলেও সিলেট কোনো দিনই আর যাবো না।

অভিযোগ আছে, সিলেটে একটু রাত হলে কিংবা একটু সকালে যখন রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে, তখন পুলিশ রাস্তায় কাউকে পেলে এভাবেই হেনস্থা করে। বিশেষ করে পর্যটকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণে সিলেটের পর্যটনে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *