হিন্দুদের ‘গোমূত্র খাদক’ বলে পদ হারালেন পাকিস্তানি মন্ত্রী

Slider বিচিত্র

পুলওয়ামা হামলার ঠিক দশদিন বাদে হিন্দুদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন পাকিস্তানের মন্ত্রী ফৈয়াজুল হাসান চৌহান। একটি জনসভায় তিনি হিন্দুদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘হিন্দুমাত্রই গোমূত্র খাদক। ’ ভারতে তো বটেই পাকিস্তানেও এই মন্তব্যের জেরে বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন ফৈয়াজ।

তাকে শাস্তি দেওয়া হতে পারে তা আগেই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নইমূল হক।

তিনি বলেন, সরকার এই ধরনের নির্বোধের মতো মন্তব্য সহ্য করবে না। টুইটারে ফৈয়াজুলের শাস্তির দাবি জানান একাধিক মন্ত্রীও।
ইমরান খানের এক মন্ত্রী আসাদ উমর বলেন, “আমাদের জাতীয় পতাকায় সবুজের পাশাপাশি সাদা রংও রয়েছে।

এই সাদা রংটা সংখ্যালঘুদের জন্য। হিন্দুদের ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ। ”
গত মঙ্গলবার ফৈয়াজকে ডেকে পাঠানো হয় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সর্দার উসমান বুজদারের দপ্তরে। ফৈয়াজুল পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ডেকে তাকে এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী বুজদার। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশেই বুজদার এই সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাও ইমরান খানের একটা কৌশলগত চাল। এই সিদ্ধান্তের ফলে, একদিকে যেমন পাকিস্তানে বসবাসকারী ৯০ লক্ষেরও বেশি হিন্দুকে পাশে থাকার বার্তা দেওয়া গেল, অন্যদিকে, গোটা বিশ্বের কাছেও ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন ইমরান। যদিও, অনেকে এই ঘটনাকে লোকদেখানো বলে কটাক্ষ করছেন। কারণ পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা কতটা সঙ্গিন তা এখন আর কারও অজানা নয়।

এদিকে, ইমরানের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কাশ্মীরের নেতারাও। পিডিপি নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ইমরানের প্রশংসা করার পাশাপাশি ভারত সরকারের সমালোচনাও করেছেন ঘুরিয়ে, “খুবই আপত্তিকর মন্তব্য, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে তো যে যত সাম্প্রদায়িক কথা বলবে সে তত প্রশংসা কুড়োবে। ”

উমর আবদুল্লার সুরও একই। তিনি বলছেন, “হিন্দু বিরোধী মন্তব্য করে পাকিস্তানের মন্ত্রীকে পদ খোয়াতে হল, আর ভারতে তো একজন রাজ্যপাল কাশ্মীরকেই বয়কটের ডাক দিলেন, কেউ তার নিন্দাও করল না। ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *