ভারতীয় পাইলটের মুক্তি দাবি পাকিস্তানের ফাতিমা ভুট্টোর

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ঢাকা: পাকিস্তানের হাতে আটক ভারতীয় বিমান বাহিনীর একজন পাইলটের মুক্তি দাবি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ভাইঝি ফাতিমা ভুট্টো। আকাশপথে লড়াইয়ের সময় পাকিস্তানের হাতে আটক হন ওই পাইলট।

বুধবার তার মুক্তি দাবি করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে একটি আবেগঘন চিঠি লিখেছেন ফাতিমা। তা প্রকাশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমসে।

এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। এতে আরো বলা হয়েছে, বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে আকাশপথে লড়াই তীব্র হয়ে উঠার সময় মিগ ২১ বাইসন যুদ্ধবিমান থেকে নিরাপদে বেরিয়ে পড়েন ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট। তিনি নেমে আসেন নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপাড়ে। এ সময় তাকে আটক করে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।

এরপর তাকে অবিলম্বে ও নিরাপদে ফেরত দেয়ার দাবি জানায় ভারত। ওই পাইলট বর্তমানে পাকিস্তানের শক্তিধর সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই উত্তেজনার সময়ে তাই নিউ ইয়র্ক টাইমসে মতামত কলাম লিখেছেন ফাতিমা ভুট্টো (৩৬)। তাতে তিনি লিখেছেন, শান্তি, মানবতা ও মর্যাদার প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই দিক থেকে ভারতীয় ওই পাইলটের মুক্তি দাবি করি আমি এবং পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের আরো অনেকে।
তিনি আরো লিখেছেন, আমরা তো সারাটা জীবনই কাটিয়ে দিলাম যুদ্ধ করে। আমি আর দেখতে চাই না পাকিস্তানি কোনো সেনা সদস্য মারা যাচ্ছেন। আমি আর দেখতে চাই না ভারতীয় কোনো সেনা সদস্য মারা যাচ্ছেন। আমরা এতিমদের একটি উপমহাদেশ দেখতে চাই না। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর ছেলে মুর্তজা ভুট্টোর মেয়ে ফাতিমা ভুট্টো।

তিনি ওই মন্তব্য কলামে আরো লিখেছেন, আমাদের প্রজন্মের পাকিস্তানিরা কথা বলার অধিকারের জন্য লড়াই করেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শান্তি। তার পক্ষে কথা বলতে আমরা ভীত নই। কিন্তু আমাদের রয়েছে সামরিক স্বৈরতন্ত্র, সন্ত্রাসের অভিজ্ঞতা ও অনিশ্চয়তার দীর্ঘ এক ইতিহাস। তিনি আরো বলেছেন, তার মতো দেশের বিশাল একটি অংশের চলমান উত্তেজনার প্রতি সমর্থন নেই।
ফাতিমা লিখেছেন, আমি কখনোই দেখি নি আমার দেশ প্রতিবেশীর (ভারতের) সঙ্গে শান্তিতে আছে। কিন্তু টুইটার একাউন্টে কখনোই আমি আমাদের দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধে ভূমিকা রাখতে দেখি নি।

উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে ‘#সে নো টু ওয়্যার’ হ্যাসট্যাগ শুরু হয়। এর পরই টুইটারে তা বিশ্বজুড়ে নাম্বার ওয়ান স্পট হয়ে ওঠে। গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মিরের পালওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। এর জবাবে মঙ্গলবার দিনের শুরুতে নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে বালাকোটে জৈশ ই মোহাম্মদের সবচেয়ে বড় প্রশিক্ষণ শিবিরে বোমা হামলা করে ভারত। এতে ওই ক্যাম্প ধ্বংস হয়ে গেছে বলে বলা হচ্ছে। ওই হামলায় বিপুল সংখ্যক জৈশ ই মোহাম্মদের সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে ভারত। এরপর বুধবার পাকিস্তান দাবি করে, পাকিস্তানের আকাশ সীমায় প্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় যুদ্ধবিমান প্রবেশ করায় তা গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে একজন পাইলটকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *