নড়াইলের খবর

Slider খুলনা

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম নড়াইলের উন্নয়নের লক্ষে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাঁর এ সকল প্রশংসিত উদ্যোগের ফলে নড়াইলের আইনশৃঙ্খলা বর্তমানে খুবই সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে।

নড়াইলে কর্মরত পুলিশদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের লক্ষে একটি অফিসের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে নড়াইলের পুলিশদের জন্য নতুন একটি পুলিশ অফিসের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন তিনি। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১০টায় নড়াইলের পুরাতন পুলিশ অফিসের সাথে নতুন এ ভবনের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদদ জাহিদুল ইসলাম, পিপিএম, নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শরফুদ্দীন, নড়াইলের সহকারি পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার্স) মোঃ জালাল উদ্দিন, সহকারি পুলিশ সুপার (প্র.বি.) মোঃ ইশতিয়াক আহম্মেদ, নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইলিয়াস হোসেন সহ নড়াইল জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যবৃন্দ। ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনকালে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে নড়াইল জেলা পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট। সেই সাথে পুলিশের নিরন্তর পরিশ্রমের ফলে নিয়মিত মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের আখড়ায় অভিযান চালানো হয়। এ সকল অভিযানের অধিকাংশই সফল হচ্ছে নড়াইল জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যবৃন্দের পরিশ্রমের ফলে। তারা যাতে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে এ লক্ষে এ অফিসটি স্থাপন করা হচ্ছে। এতে করে নড়াইল জেলা পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন করতে অনেক সুবিধা হবে। ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনকালে উপস্থিত অতিথিদের মাঝে মিষ্টিও বিতরণ করেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম।

চার বছর ধরে চক্ষু বিশেষজ্ঞহীন নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল!
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■: আজ (২৭,নভেম্বর)-২৭৪: নড়াইলবাসীর চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রায় চার বছর ধরে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে চক্ষু সেবা থেকে যেমন রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি অপারেশনের যন্ত্রপাতি অব্যহৃত থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন উপ-সহকারী দিয়ে নাম মাত্র চোখের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাস থেকে নড়াইল সদর হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। জেলা ৩টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চোখের চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগী উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে রোগীদের চিকিৎসার জন্য যশোর, খুলনাসহ রাজধানী ঢাকা শহরে যেতে হচ্ছে। নড়াইল হাসপাতালের বহির্বিভাগের ১২০ নম্বর কক্ষে চোখের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চোখের চিকিৎসক না থাকায় নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মো. জাহিদুল ইসলাম চোখের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি চোখের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের তিনিই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তবে জটিল রোগীদের খুলনা বা যশোরে রেফার্ড করা হয়ে থাকে। এ হাসপাতালে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য উন্নতমানের যন্ত্রপাতি থাকলেও তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চোখের চিকিৎসা নিতে আসা আকলিমা বেগম বলেন, তিনি মাস খানেক আগে এসে চোখের ডাক্তার দেখিয়েছেন। কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় পুনরায় দেখাতে এসেছেন। লোহাগড়া উপজেলার বাড়িভাঙ্গা গ্রামের কোবাদ লস্কার বলেন, আমি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। চোখের ডাক্তার দেখাতে নড়াইল সদর হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ডাক্তার না দেখিয়েই ফিরে গেলাম। কালিয়া উপজেলার নওয়াগ্রামের জিয়াউল ইসলাম সেলিম, আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, তার এক আত্মীয়কে চোখের চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় খুলনা থেকে আসা একজন চিকিৎসককে ৫০০ টাকা ফিস দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে দেখিয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসক থাকলে আমাদের অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হতো না। নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য শূন্যপদে চিকিৎসক পদায়নের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার পত্র দেয়া হয়েছে। শূন্যপদে চিকিৎসক পদায়ন হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। হাসপাতালে চোখের রোগীদের অপারেশনের সব যন্ত্রপাতি থাকলেও কনসালটেন্ট না থাকায় অপারেশন করা যাচ্ছে না।

এক সময়ের স্রোতস্বিনী নড়াইলের নবগঙ্গা নদী প্রকাশ্যে চলছে দখলের প্রতিযোগিতায় এখন ধানক্ষেত!
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■: আজ (২৭,নভেম্বর)-২৭৪: নড়াইলের এক সময়ের স্রোতস্বিনী নবগঙ্গা নদী এখন ধানক্ষেত। নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় চর। চলছে নামে-বেনামে চর দখল, ধান চাষ ও তৈরি হচ্ছে বসতবাড়ি। পলিতে নদী ভরাটে ভূমিহীন সেজে তা দখল দিচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে মামলা-মোকদ্দমা। নাব্যতা সংকটের বন্ধ নৌ যোগাযোগ। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, একসময় বর্ষা এলে নবগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ উপভোগ করেন হাজারো মানুষ । নদীটি জেলার অন্যতম প্রধান নদী ও তখনকার যাতায়াতের মাধ্যম। তাই এর তীরে গড়ে উঠেছিলো জেলার সবচে বড় বাণিজ্যিক বাজার নড়াইলের লোহাগড়া, লক্ষ্মীপাশা ও মহাজন বাজারও গড়ে উঠে। তখন কোলকাতা থেকে স্টীমার নিয়ে বনিকেরা খুলনা হয়ে নড়াইলে আসতেন বাণিজ্য করতে। সেবই এখন কেবলই স্মৃতি। আশির দশকে অসংখ্য লঞ্চ এবং পাল তোলা নৌকায় গুন টেনে পণ্য আনয়ন করতেন ব্যবসায়ীরা। নাব্যতা সংকট ও কালের আবর্তে নবগঙ্গা নদী তার রূপ যৌবন সবই হারিয়েছে। নেই সেই আগ্রাসী রূপ। এর জন্য যতটা প্রাকৃতি দায়ী তার চেয়ে মানুষের বেশী দায়ী। নবগঙ্গার কুন্দশী থেকে মহাজন পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিমি. পায়ে চলা সরু পথে পরিণত হয়েছে। এমনকি নদীতে বাঁধ দিয়ে মৎস্য শিকারীরা মাছ শিকার করছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতিকাল শীতে নবগঙ্গা নদীর নাব্যতা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় লোহাগড়া-নড়াইল হয়ে খুলনায় নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পণ্য পরিবহনে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ব্যবসা বাণিজ্যে নেমেছে ধস। নাব্যতা ফিরাতে ২০১১-১২ অর্থ বছরে ২৫ কোটি টাকায় মল্লিকপুর থেকে মহাজন পর্যন্ত খনন করা হলে তা কোন কাজে আসে নাই। প্রতি বর্ষা মৌসূমে পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। পৌর মেয়র আশরাফুল আলম মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম রেজা খান জানান, ‘নদী শাসন আইন নবগঙ্গার জন্য কার্যকর হয় না। প্রকাশ্যে চলছে নবগঙ্গা নদী দখলের প্রতিযোগিতা’। কুন্দশী গ্রামের মৎস্যজীবী গণেশ ও সনজয় বিশ্বাস, লক্ষীপাশা গ্রামের জিতেন, সনজিৎ ও নেপাল বিশ্বাস, আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, এই নদীই আমাদের রুটি-রুজির উৎস। জেলেরা মাছ শিকার করে জিবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্ত নদীতে পানি না থাকায় এখন আর জেলেরা নদীতে আসেনা। অনেকে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। ফারাক্কার বিরুপ প্রভাবে এক কালের খরস্রোতা নবগঙ্গা শুকিয়ে এখন খাল। আর জেগে উঠা চরগুলো ধান চাষের অন্যতম আঁধারে পরিনত হয়ে পড়েছে। ,আমাদের কিছু কাজ শুরু হলে সরকার তৎপরতা বাড়ায়। আমাদের তৎপরতা থেমে গেলে সরকারী উদ্যোগও বন্ধ হয়ে যায়। নবগঙ্গা নদী দখল আর দুষনমুক্ত এবং ড্রেজিং করে এই নদীর প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি করেন তিনি। নড়াইলের ডিসি আনজুমান আরা বেগম জানান, নদী কমিশনের নীতি ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ি কাজ করছি। সম্প্রতি নড়াইলের চিত্রনদীর অপদখলমুক্ত করতে অভিযান করেছি। জেলার সকল নদীরক্ষায় অপদখলমুক্ত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *