ধানের শীষের প্রার্থীদের চেনা যাবে ১১ দিন পর

Slider টপ নিউজ

ঢাকা: বিএনপি দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করলেও প্রার্থীদের চিঠি বিতরণ এখনো শেষ করতে পারেনি। গতকাল সোমবার মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হলেও আজ কোনো ঘোষণাও দেওয়া হচ্ছে না। দলটি বলছে, প্রার্থীর অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে তারা। অর্থাৎ ৩০০ আসনে কে হবেন ধানের শীষের প্রার্থী, তা জানতে প্রার্থী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে আরও ১১ দিন।

বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সময় বেশি গেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি। এ কারণে প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত বিএনপি দলের প্রার্থীদের নাম গোপন রাখার চেষ্টা করছে।

বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সারা দেশে বিএনপির অনেক নেতার নামে মামলা আছে। অনেকে ‘মিথ্যা’ মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ কারণে বিভিন্ন আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম রাখা হয়েছে। একজন বাদ পড়লে যেন ওই আসনে দ্বিতীয়জন কিংবা তৃতীয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এবার বিএনপি কোনোভাবে ভোটের মাঠ ছাড়বে না, যে কারণে মনোনয়নের চিঠি নিয়েও একটু বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেওয়ার আগ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থীদের নাম জানানো হবে না। চিঠি পাঠিয়ে তারপর তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত সময় আছে, এ কারণে প্রার্থীদের চিঠি দেওয়ার বিষয়ে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী কাল বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর। এই সময়ের মধ্যে কোন প্রার্থীকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে সে সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিএনপির হাতে থাকছে। আপাতত দল ও জোটের এক বা একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে রাখবেন। বিধি অনুযায়ী বিএনপি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়ে যাকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলবে সেই হবে বিএনপি বা জোটের প্রার্থী। বাকিরা স্বয়ংক্রিয় ভাবেই নির্বাচন করা থেকে বাদ পড়বেন।

আজ মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় ঘিরে অনেক নেতা-কর্মীর ভিড় রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীরা তাদের প্রার্থীর মনোনয়নের চিঠি নিতে নেতার সঙ্গে এসেছেন। তবে চিঠি পাওয়ার আগ পর্যন্ত কেউই সেভাবে নিশ্চিত হতে পারছেন না যে, তিনি মনোনয়নের চিঠি পাচ্ছেন কিনা। এ কারণে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে।

জানা গেছে, আজ বিএনপি যেসব প্রার্থীদের মনোনয়ন দিচ্ছে, তাদের বেশির ভাগ নেতাকে মুঠোফোনে ফোন করে চিঠি নিতে আসতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক আসনে একাধিক প্রার্থী দেওয়ার কারণে অনেকে নিজের মনোনয়ন নিয়ে দ্বিধায় আছেন। যার কারণে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় কমছে না।

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য মাহবুব হোসেন গতকাল সোমবার থেকে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, মনোনয়নের চিঠি বিতরণের প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করা যেত। নেতা-কর্মীদের দুর্ভোগ কমত। দূর থেকে আসা নেতা-কর্মীদের দুর্ভোগ হচ্ছে।

ফরিদপুর-২ থেকে মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ৩০ ডিসেম্বর ভোটাররা ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের জয় হবে।

আজ সকাল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ভিড় করছেন। একজন প্রার্থী মনোনয়নের চিঠি নিয়ে বের হওয়া মাত্র তাঁর নেতা-কর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিচ্ছেন। অনেক নেতাকে তাঁর কর্মীরা জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। চিঠি নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় প্রত্যেক প্রার্থীকে ঘিরে ধরছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সবার কাছে প্রশ্ন, কোন আসনে মনোনয়ন পেলেন? আপনার নাম কী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *