খাশোগি হত্যাকান্ডে জড়িতদের মার্কিন ভিসা বাতিল হচ্ছে

Slider সারাবিশ্ব


ঢাকা: বহুল আলোচিত জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডে জড়িতদের ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এমন শাস্তিমূলক পদক্ষেপের নজির নিকট অতীতে আর নেই বললেই চলে। মঙ্গলবার তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান খাশোগি হত্যাকান্ড নিয়ে বক্তৃতা করার কিছুক্ষণ পরই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এসময় তিনি বলেন, সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাটক মঞ্চস্থ করেছে। সৌদি আরব খাশোগি হত্যাকান্ডের জন্য দুর্বৃত্তদের দোষারোপ করে যে বিবৃতি দিয়েছিল, গতকাল ট্রাম্প তার বিরুদ্ধেও কথা বলেন। তিনি সরাসরি সৌদি আরবের ওই বিবৃতি প্রত্যাখান করেন।

ট্রাম্প বলেছেন, খাশোগি হত্যা ও পরবর্তীতে এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে সৌদি আরব চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।
তখনও প্রিন্স মুহাম্মদ খাশোগি হত্যার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।

গত কয়েকদিনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েক দফা নিজের সুর বদলেছেন। প্রথমে তাকে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে অনাগ্রহী দেখা গেছে। পরে দেশে ও দেশের বাইরে অব্যাহত চাপের মুখে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে সৌদি আরব প্রাথমিকভাবে যে বিবৃতি দিয়েছিল, ট্রাম্প এর প্রতি সাধুবাদ জানান। তিনি দীর্ঘদিনের মিত্রের পক্ষেই সাফাই গান। এর কয়েকদিন পরেই আবারো নিজের অবস্থান বদলে খাশোগি হত্যাকান্ডের তদন্ত দাবি করেন।
খাশোগি হত্যাকান্ডে কারা দায়ী এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেননি ট্রাম্প। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কয়েকজন সৌদি সরকারি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে শনাক্ত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে,্ এরা খাশোগি হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা বাতিলসহ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২১ সৌদি নাগরিকের দেয়া মার্কিন ভিসা বাতিল বা তাদেরকে ভিসা প্রাপ্তির অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে পম্পেও বলেন, বিশ্বের জানা উচিত আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। এছাড়া, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায় কিনা তাও ভেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, এ ঘটনায় শাস্তিই যুক্তরাষ্ট্রের শেষ কথা না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা আমি, কেউই এ পরিস্থিতে সন্তুষ্ট না। এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাসের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা এতে সাড়া দেননি।

এর আগে, গতকাল একে পার্টির পার্লামেন্টারিয়ানদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে খাশোগি হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বলেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সেখানে তিনি খাশোগি হত্যার আদ্যোপান্ত প্রকাশ করার জন্য সৌদি আরবের প্রতি আহবান জানান। তিনি এ হত্যাকান্ডকে পূর্ব পরিকল্পিত বলেও আখ্যা দেন। এখন সৌদি আরবের মিত্রদেশগুলো দেশটির ক্ষমতাধর ক্রাউন প্রিন্সকে দোষারোপ করেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *