মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কি পরিণতে হবে রিপাবলিকানদের!

Slider সারাবিশ্ব


ঢাকা:নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট কংগ্রেসের উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান পার্টি। তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনে সেই চিত্র পাল্টে ফেলতে চান বিরোধী দল ডেমোক্রেট পার্টি। আর সে জন্য প্রচারণার মাঠে নেমে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ইতিহাস সৃষ্টিকারী সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওদিকে এ নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানদের থেকে দুই অংকে এগিয়ে আছে জনমত জরিপে। ফলে কপালে ভাজ দেখা দিয়েছে রিপাবলিকান নীতিনির্ধারকদের। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিম রাজ্যগুলোতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে গেছে অনেক। সেখানকার ভোটাররা ডেমোক্রেটদের পালে হাওয়া দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মিশিগান, উইসকনসিন ও মিনেসোটার মতো রিপাবলিকানদের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে ট্রাম্পের সমর্থন অনেকটাই কমে গেছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে সর্বশেষ জনমত জরিপ করেছে মেরিস্ট ইন্সটিটিউট ফর পাবলিক অপিনিয়ন। তাতে দেখা গেছে রিপাবলিকানদের থেকে ডেমোক্রেটরা এগিয়ে আছে শতকরা ১২ পয়েন্টে। ওই সংস্থার পরিচালক লি মিরিঙ্গয়ফ বলেন, যেভাবেই আমরা প্রাপ্ত ডাটা পর্যবেক্ষণ করি না কেন, একই প্যাটার্ন বেরিয়ে আসে। মধ্য-পশ্চিম রাজ্যগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ওদিকে বুধবার আলাদা একটি জনমত জরিপ প্রকাশ করেছে কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটি। তাতে দেখা যায়, রিপাবলিকানদের চেয়ে শতকরা ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে আছে ডেমোক্রেটরা। আবার পলিটিকো অ্যান্ড মর্নিং কনসাল্ট-এর জরিপে প্রায় একই রকম ফল দেখা যাচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ডেমোক্রেটরা এগিয়ে আছে ১০ পয়েন্টে। এই তিনটি জরিপেই ভোটারদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিশেষ কোনো প্রার্থী ছাড়া তারা কাকে পছন্দ করছেন নিজেদের এলাকায়- ডেমোক্রেট নাকি রিপাবলিকানদের। তারই ভিত্তিতে ওই জরিপ করে তার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। একটি হলো প্রতিনিধি পরিষদ। অন্যটি সিনেট। এর মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে ডেমোক্রেটদের প্রয়োজন হবে ২৩ টি আসন। আগামী ৬ই নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে যদি তারা এই সংখ্যক আসন পায় তাহলে প্রতিনিধি পরিষদ চলে আসবে তাদের হাতে। এমনটা হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে বড় রকমের একটি ধাক্কা খাবেন। কারণ, কংগ্রেস থেকে কোনো এজেন্ডা অনুমোদন করাতে হলে আগে প্রতিনিধি পরিষদে তা পাস করাতে হয়। ডেমোক্রেটরা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে ট্রাম্প সহজে কোনো এজেন্ডা অনুমোদন করাতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে ইতিহাসও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে যায় না। কারণ, ইতিহাস বলে, মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আসন হারিয়েছে এবং এমনটাই সেখানে প্রবণতা দাঁড়িয়েছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় পর্যায়ে এপ্রুভাল রেটিং অনেক কম। এর প্রভাব পড়বে রিপাবলিকান প্রার্থীদের ওপর । জুলাইয়ে জনমত জরিপে দেখা গেছে মিশিগান, উইসকনসিন ও মিনেসোটার মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ ভোটার মনে করেন দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য। অন্যান্য দেশের সঙ্গে ট্রাম্প যে বাণিজ্যিক যুদ্ধ শুরু করেছেন সে জন্য মধ্য-পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে তার জনপ্রিয়তা কমে গেছে। আমদানি পণ্যের ওপর ট্রাম্প আয়কর বাড়িয়েছেন। এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কৃষক ও গাড়ি উৎপাদনকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ, তাদের পণ্যের ওপরও অধিকহারে আয়কর বসানো হয়েছে প্রতিশোধ হিসেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *