পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় উন্নত দেশসমূহকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
পেরু বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের প্ল্যানারী সেশনে গতকাল বুধবার তিনি বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে বক্তৃতা করছিলেন।
বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হয়েও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমূদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। যদি তাই হয়, তাহলে প্রায় ৪ কোটি মানুষ তাদের বাস্তুভিটা হারাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়। এসব মানুষকে রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী বলেন, সৌরশক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ সামনের দিক থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত এদেশে ৩২ লাখ সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় দেড় কোটি লোককে সৌরবিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে।
বছরে ১শ’ বিলিয়ন ডলারের সবুজ জলবায়ু তহবিলে উন্নত বিশ্ব লিমায় ১০ বিলিয়ন দেয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, লিমায় আগামী বছরের প্যারিস চুক্তির রূপরেখাসহ কার্বন নিঃসরণ রোধে আইনি বাধ্যবাধকতার খসড়া চূড়ান্ত করতে হবে।
তিনি গ্রীন ফান্ডে কোন দেশ কী পরিমাণ অর্থ দেবে তা লিমায় সুনির্দিষ্ট করে ঘোষণার দাবী জানান।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কারো দিকে তাকিয়ে না থেকেই নিজস্ব অর্থায়নে অভিযোজন ও প্রশমন খাতে ৪শ’ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প নিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানী খাতে বিশ্বে উদাহরণ তৈরী করেছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বকে তিনি লস এন্ড ড্যামেজ তহবিলে অর্থায়ন করার আহবান জানান।
এ দিকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গতকাল লিমায় এক সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় সবুজ তহবিলে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টিকে অর্থায়নের ইস্যু হিসেবে নেয়ার আহবান জানান।
এছাড়া ডারবান রোডম্যাপের আলোকে কার্বন নির্গমন রোধ, অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় উন্নয়নশীল ও গরীব দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যেসব উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছিল সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ব নেতাদের তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ, গোলাম রব্বানী, ইয়াহিয়া চৌধুরী, টিপু সুলতান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজিবুর রহমান ও জাতিসংঘ মিশনের বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এম. আব্দুল মোমেন।