স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বাড়ায় পেটের রোগ

Slider গ্রাম বাংলা

টিভির রিমোর্ট থেকে রান্নায় লবণ কম-সব কিছুতেই বেশ চোখ রাঙিয়ে দিতে ভালোবাসেন? যদি এই সবগুলো গুণই আপনার বেশ টইটম্বুর থাকে তাহলে সাবধান! স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে যদি ঝগড়ারূপী বেশ বড়সড় একটা মৌমাছি ঢুকে হুল ফোটাতে থাকে তাহলে কিন্তু শরীর-স্বাস্থ্যে তার ছাপ পড়বে ষোলোআনা। ঝগড়া বাড়লে, বাড়বে পেটের রোগও।

ঘন ঘন পেট খারাপও হতে পারে! এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।
তবে ঝগড়ার তো বেশ রকমফের থাকে। তার নানা বৈচিত্র্যের উপরই নির্ভর করবে আপনার শরীর কতটা খারাপ হলো। পেট ব্যথাটা ঠিক কতটা বাড়ল। তার জন্য জানা দরকার ঠিক কতটা, কেমন ভাবে ঝগড়া করতে অভ্যস্ত আপনি। মার্কিন গবেষকরা সেটা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ৪৩ জোড়া দম্পতির উপর বেশ কড়া ভাবে নজর রেখেছিলেন।

এই গবেষণা শুরু করেন ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষক। শরীরের সঙ্গে যে মনেরও বেশ একটা সম্পর্ক রয়েছে সেটা প্রমাণ করতেই এই গবেষণা। মন খারাপ হলে তার ছাপ পড়ে শরীরে এটা তো সবারই জানা।

অনেকক্ষণ ধরে ঝগড়া করলে শরীরে বেশ একটা ক্লান্তি আসে, বুক ধড়ফড় করে যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ থেকে সুগার সবই বাড়তে পারে চড়চড় করে।
তবে দাম্পত্য কলহের সঙ্গে পেটেরও যে একটা অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক রয়েছে সেটা ওই দম্পতিদের উপর নজর রেখে এবং তাদের উপর নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পেরছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা বললেন, যদি কোমর বেঁধে বেশ হাঁক ডাক করেই ঝগড়া করেন তাহলে পেটের সমস্যা হতে বাধ্য। যদি বিরক্ত হয়ে স্বামী বা স্ত্রীকে দু’টো কটুকথা শুনিয়ে দেন, এবং সেই সময় আপনার মুখ, ভুরু একই সঙ্গে বেশ ভয়ানক ভঙ্গি নেয় তাহলে পেটের রোগও বাড়বে লাফিয়ে লাফিয়ে। সেই সঙ্গে প্রবল উত্তেজনার বশে আরও নানা রকম রোগও হানা দিতে পারে শরীরে।

ওই ৪৩ জোড়া দম্পতির বয়স ছিল ২৩ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে। তিন থেকে পাঁচ বছর বিয়ে হয়েছে এমন দম্পতিদেরই বেছেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কারণ একদম নতুন বিয়েতে প্রেমপ্রেম ভাবটা বেশ তাজা থাকে। গবেষকরা ওই দম্পতিদের পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের নানা বিষয় নিয়ে তর্ক, ঝগড়া করতে বলেন।

ঝগড়ার আগে এবং পরে তাদের রক্তের নমুনা নিয়ে এলবিপি টেস্ট (এটি একটি রাসায়নিক যা রক্ত পরীক্ষার সময় লাগে) করেন। দেখা যায় যে দম্পতিরা বেশ জোড়ালো ঝগড়া করেছেন তাদের রক্তে মিলেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া।

ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেনিশ কিয়েলকট-গ্লেসার বলেছেন, দাম্পত্য অশান্তি থেকে যে স্ট্রেস তৈরি হয় তার থেকে শরীরে তাপ উৎপন্ন হয়, হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যেটা নানা ভাবে রোগ তৈরি করে। পেটের সমস্যা ছাড়াও সম্পর্কের টানাপড়েন ডেকে আনতে পারে মানসিক সমস্যাও।

তিন থেকে পাঁচ বছরের পুরনো স্বামী বা স্ত্রীয়ের সঙ্গে ঝগড়াটা তো আর শান্তভাবে, ধীরে সুস্থে করা যায় না, তাই ঝগড়া করতে যারা আগ্রহী, তারা উত্তেজনাটা একটু কমিয়ে, গলার আওয়াজ খানিক নামিয়ে ঝগড়াটা করাই ভালো। এতে মন, মেজাজ, প্রতিবেশী সবাই ভালো থাকে। সেই সঙ্গে পেটও ভালো থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *