গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয়: শহীদুলকে মুক্তি দিন

Slider বিনোদন ও মিডিয়া


ঢাকা: শহীদুল আলমকে ছেড়ে দেয়া উচিৎ বাংলাদেশের। প্রখ্যাত এই ফটোগ্রাফার ও অ্যাক্টিভিস্ট যেই কালাকানুনের অধীনে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার টার্গেট হয়েছেন এমন আরও অনেকেই। তাই শহীদুলকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি এই আইনও পরিবর্তন করা উচিৎ। বৃটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান এক সম্পাদকীয়তে এসব বলেছে। এতে বলা হয়, শহীদুল আলমের ছবি গার্ডিয়ান সহ বিশ্বব্যাপী বহু প্রকাশনায় ছাপা হয়েছে। ৬৩ বছর বয়সী এই ফটোগ্রাফার নিজেই এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্যে’র কারণে বাংলাদেশের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। দেশকে অচল করে দেয়া সাম্প্রতিক বিক্ষোভ নিয়ে সাক্ষাৎকার দেয়ার ঘণ্টাকয়েক পরে তাকে আটক করা হয়। তিনি নিজে যেমনটা পর্যবেক্ষণ করেছেন, প্রাথমিকভাবে এই বিক্ষোভ ছিল সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে। তবে পরবর্তীতে দুর্নীতি এবং গণমাধ্যমের ওপর শাসক দল আওয়ামী লীগের দমনপীড়ন থেকে উদ্ভূত ক্ষোভ থেকে এই বিক্ষোভ আরও দাঁনা বেধে উঠে।

বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় যেই দমনপীড়ন চালানো হয়, সেখানে পুলিশকে রাজপথে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়তে দেখা গেছে। পরবর্তীতে শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। একেবারেই সাধারণ সমালোচনা কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে আলোচনার দরুন এর আগে বহু নাগরিক ও ২০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করে মামলা হয়েছে।
এমনকি সরকারও স্বীকার করেছে এই আইন বাতিল করা উচিৎ। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলো এই আইনের স্থলে নতুন যেই আইন প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি আরও ভয়াবহ।

সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, বৃটেন সহ অন্যান্য দেশের উচিৎ এই আইনের সঠিক সংস্কারের দাবিতে চাপ দেয়া। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের প্রতি শহীদুল আলমের মুক্তি, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার ও পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের আহ্বান জানানো হয় সম্পাদকীয়তে। এই ফটোগ্রাফারের বন্ধুরা বলছেন, আদালতে তিনি নিজ থেকে হাঁটতে পারছিলেন না। তিনি বলেছেন যে, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।

এই ইস্যুতে চাপ দেয়ার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে সরকারসমূহ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর। ফটোগ্রাফির প্রতি শহীদুল আলমের অবদান সত্যিই বৈশ্বিক মাপের। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ফটো লাইব্রেরি দৃক ও মেজরিটি ওয়ার্ল্ড এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রশিক্ষণ দিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার শ’ শ’ সাংবাদিককে। এছাড়াও, তিনি সান্ডারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিজিটিং প্রফেসর। নিশ্চিতভাবেই এ ধরণের উচুঁমাপের ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার উদ্দেশ্য ছিল শীতল প্রভাব তৈরি করা। শহীদুল আলমের পক্ষালম্বন করার অর্থ হলো বাংলাদেশে সাংবাদিক ও নাগরিকদের সোচ্চার হওয়ার অধিকারকে সমর্থন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *