আজ ১৭ মে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশে ফেরেন তিনি। সেদিন সারা দেশ থেকে আসা লাখো মানুষ তাকে স্বাগত জানান। তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দিনটি ছিল রবিবার। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলানগর পর্যন্ত লাখো জনতার ছিল ঢল। সেদিনের গগণবিদারী মেঘ গর্জন, ঝাঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল। আর অবিরাম মুষল ধারে ভারি বর্ষণে যেন ধুয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃ হত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন। বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমানযোগে শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে ঢাকার তৎকালীন কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে স্বাধীনতার অমর স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল ঢাকার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ নিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম, পিতৃ হত্যার বদলা নেব’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিল রাজধানী ঢাকা। জনতার হৃদয়ছোঁয়া ভালোবাসার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা ও সৈনিকরা ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা চালিয়ে তাকেসহ তার পরিবারের সব সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময়। বিকাল ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন দেশের বরেণ্য নাগরিক ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দেশ ও জাতির কল্যাণে, আধুনিক এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।