জাহিদুর রহমান/শিশির আমিন, খুলনা: প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা কে কোথায় ভোট দেবেন তা নিয়ে ভোটারদের যত না আগ্রহ তার থেকে বেশি আগ্রহ মিডিয়া কর্মীদের।
তবে মেয়র প্রার্থীরা সবাই সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে নিজ ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে জানা যায়। কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচ প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতিকের নজরুল ইসলাম মঞ্জু, এরশাদের জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতিকের শফিকুর রহমান মুশফিক, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতিকের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক এবং সিপিবি-বাসদের কাস্তে মার্কার মো. মিজানুর রহমান বাবু।
এরমধ্যে তালুকদার আব্দুল খালেক ২২নং ওয়ার্ডে পাইওনিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ভোট দেবেন সকাল ৮টায়। নজরুল ইসলাম মঞ্জু ২৭নং ওয়ার্ডে রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন সকাল সাড়ে ৮টায়। শফিকুর রহমান মুশফিক ২৯ নং ওয়ার্ডে খুলনা আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক মহানগরীর ১৮নং ওয়ার্ডে রেভা. পলস্ হাই স্কুল কেন্দ্রে এবং মিজানুর রহমান বাবু নগরীর ২৫নং ওয়ার্ডে শহীদ সোহরাওার্দী কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন।
মোট ভোটার
আজকের নির্বাচনে খুলনা সিটিতে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন।
নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৭৩ জন
প্রার্থী এবং তাদের কর্মী সর্মকেরা আচরণবিধি লংঘন করলে তাৎক্ষণিক জরিমানা ও শাস্তির পাশাপাশি সামারি ট্রায়াল করে দন্ড দেবেন এসব ম্যাজিস্টেট। এরমধ্যে ৩১টি ওয়ার্ডে ৬০ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ১৩ জন বিচারিক ম্যাজিষ্টেট দায়িত্ব পালন করবেন।
চার হাজার ৯৭২ জন ভোটগ্রহন কর্মকর্তা
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার মিলে চার হাজার ৯৭২ জন ভোটগ্রহন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে প্রতি কেন্দ্রে একজন প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ২৮৯জন, প্রতিটি কক্ষে একজন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে এক হাজার ৫৬১ জন এবং প্রতিটি কক্ষে দুইজন পোলিং অফিসার হিসেবে তিন হাজার ১২২ জন ভোটার সনাক্ত ও ব্যালট দিয়ে ভোট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এসব কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসির ৩১ নিজস্ব পর্যবেক্ষক
ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট কার্যক্রমের গতি প্রকৃতি, ভোটার, প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকদের গতিবিধি এবং সর্বপোরি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন সবকিছু সাধারণ পোশাকে পর্যবেক্ষণ করবেন ইসির এই নিরব পর্যবেক্ষকরা। ভোটে কোন ধরণের অনিয়ম দেখলে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ, রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করা, প্রয়োজনে কমিশনকে ঘটনা সম্পর্কে তথ্য জানাবেন তারা। এসব নিজস্ব পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে ৩১ জন, যার মধ্যে ইসির যুগ্ম সচিব আব্দুল বাতেনকে সমন্বয়ক, উপসমন্বয়ক মো. শাহাদাত হোসেন এবং ১৯ জন মাঠে ঘুরে ঘুরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
পাঁচ কেন্দ্র ও ওয়ার্ডে ইভিএম ও সিসি ক্যামেরা
ভোটার সচেতন ও শিক্ষিত এবং শহরকেন্দ্রিক ২৪ ও ২৭ নং ওয়ার্ডে ইভিএম ভোট নেয়া হবে। যান্ত্রিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ যাতে বুঝেশুনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য নগরীর এই দুটি ওয়ার্ডকে বেছে নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিবেচনায় সিটির তিনটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার সহায়তায় নির্বাচন করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। যার মধ্যে বিএল কলেজ কেন্দ্র, পিটিআই এবং পাইওনিয়র কলেজ কেন্দ্র রয়েছে। ভোটারদের গতিবিধি ও ভোটকেন্দ্র কার্যক্রম এই ক্যামেরার সাহায্যে অবলোকন করবেন কমিশন। এসব প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে নির্বাচনে ব্যবহারে আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে।