চলছে চৈত্র মাস। গরমের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। এই গরমে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থার নাম হিট স্ট্রোক। শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোকের আশংকা বেড়ে যায়। এছাড়াও গরমে পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া বা রোদে বেশিক্ষণ অবস্থান করলেও হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কোন বয়সসীমা নেই। তবে যারা এই গরমে কায়িক পরিশ্রম করেন যেমন, রিক্সা চালক, কৃষক ও শ্রমিক তাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি একটু বেশি।
যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন হিট স্ট্রোক হয়েছে- ঘাম বন্ধ হওয়া, ত্বক শুষ্ক ও লালাভ হওয়া, শ্বাস দ্রুত হওয়া, নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, খিঁচুনি, মাথা ঝিম ঝিম,বমিভাব, অস্বাভাবিক ব্যবহার, অসংলগ্নতা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। সেই সাথে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রচুর পানি পিপাসা পাবে, কথা বলতে কষ্ট হবে।
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যা করবেনঃ
১। গরমে এমন পোশাক পরিধান করুন যেটা হবে ঢিলেঢালা। সাদা বা হালকা রঙের পোশাক হলে সবচেয়ে ভালো হয়। এই ক্ষেত্রে সুতি কাপড় বেছে পরিধান করুন।
২। গরমে পানির কোন বিকল্প নেই। প্রচুর পরিমাণে পানি ও শরবত পান করুন। প্রয়োজনে পানি সাথেই রাখুন। সময় পেলে একটু পর পর পান করুন।
৩। বেশি করে খাবার স্যালাইন, ফলের রস ও লাচ্ছি পান করলে উপকৃত হবেন। সেই সাথে ডাবের পানি পান করতে পারেন।
৩। কাজেকর্মে বাহিরে গেলে মাথায় ছাতা ব্যবহার করুন। এছাড়াও মাথা ঢাকার জন্য কাপড় জাতীয় কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যবহার করতে পারেন চওড়া ক্যাপ।
৪। অ্যালকোহল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। চা ও কফি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যান।
৫। স্বাস্থ্যকর খাবার খান। বাইরের খাবার বিশেষ করে বার্গার, স্যান্ডউইচ, ফুটপাতের তেলে ভাজা জিনিস, রাস্তার পাশের আইসক্রিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৬। রোদের মধ্যে কঠোর পরিশ্রমের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিন।
৭। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে যেখানে ছায়া রয়েছে এমন জায়গায় অবস্থান করুন। প্রয়োজনে গোসল করতে পারেন।
হিট স্ট্রোক হলে কি করবেনঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে তার কাপড় খুলে দিন। শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। সম্ভব হলে কাঁধ, বগল ও কুঁচকিতে বরফ দিন। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাবার স্যালাইন দিন ও দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।