পুরুষদেরকে হস্তমৈথুনের দায়ে ১০০ ডলার জরিমানা আইনের প্রস্তাব!

Slider বিচিত্র

131015texasমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস স্টেটের এক নারী এমপি পুরুষদেরকে প্রতিবার হস্তমৈথুনের দায়ে ১০০ ডলার জরিমানার বিধান রেখে একটি আইন করার প্রস্তাব করেছিলেন।

একই বিলে কোনো পুরুষ যদি কোলোনোস্কোপি বা ভ্যাসেকটমি করাতে চায় বা ভায়াগ্রা কিনতে যায় তাহলে তাকে ২৪ ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করানোর বিধান করার প্রস্তাব করা হয়। কেননা গর্ভপাত ঘটাতে গেলে নারীদেরকেও ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করিয়ে গর্ভপাতের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বুঝানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে আইন করা হয়েছে।

গত বছরের মার্চে বিলটি প্রস্তাব করেছেন টেক্সাস হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ এর ডিস্ট্রিক্ট ১৪৮ থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট দলের স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ জেসিকা ফারার। তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এখন ক্ষমতায় নেই। ফলে তিনি জানতেন যে, তার আনীত বিলটি হালে খুব একটা পানি পাবে না। কিন্তু এরপরও তিনি বিলটি উত্থাপন করেন পুরুষ আইন প্রণেতাদেরকে ভড়কে দেওয়ার জন্য।

ফারার অনেকদিন ধরেই নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। টেক্সাসের আইনে নারীদের গর্ভপাত ঘটানো খুবই কঠিন। আর তার আনীত বিলটিতে তিনি নারীদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে পুরুষদের তুলনায় যে বৈষম্য রয়েছে সে ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন। নারীরা স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কতটা বাধার সম্মুখীন হন সে বিষয়টি তিনি তুলে এনেছেন।

মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আসুন দেখে নেওয়া যাক নারীদের প্রতি টেক্সাস কী করেছে। যদি পুরষদেরকেও একই অনধিকারমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাহলে কেমন হবে?

ফারার তার বিলে পুরুষদেরকে হস্তমৈথুনের দায়ে শাস্তি দেওয়ার বিধান করে আইন করার প্রস্তাব দিয়েছেন এই যুক্তিতে যে, পুরুষদের হস্তমৈথুনের ফলেও তো প্রাণের পবিত্রতা খর্ব করা হয়। একেকবার হস্তমৈথুনের ফলে বীর্যের সঙ্গে যে শুক্রাণুগুলো বেরিয়ে যায় তাদের কোনো একটি হয়তো শিশু হয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারত। সুতরাং নারীদের গর্ভপাতের মতোই পুরুষদের হস্তমৈথুনের মাধ্যমেও তো একজন অনাগত শিশুকে হত্যা করা হয়।

ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের এমপিরা এই আইন প্রস্তাবের বিরোধীতা করছেন তীব্রভাবে। তারা ফারারকে নিয়েও মূর্খ বলে হাসি তামাসা করেন এবং বলেন জীব বিজ্ঞানের কোনো জ্ঞানই তার।

টেক্সাসের আইনে গর্ভপাত ঘটাতে সহায়তাকারী এবং গর্ভাপাতকারী নারী উভয়ের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।

এছাড়া টেক্সাস স্টেটের ৯৬% কাউন্টিরি কোনো ক্লিনিকে গর্ভাপাত ঘটাতে চিকিৎসা সহায়তা করা হয় না। ওই ৯৬% কাউন্টিতে টেক্সাস স্টেটের মোট নারীদের ৪৩% বাস করেন।

আর ২০১৪ সালে গর্ভপাতবিরোধী আইন করার পর টেক্সাসের গর্ভাপাতে সহায়তাকারী ক্লিনিকের সংখ্যা ৪৪টি থেকে কমে ১৮টিতে দাঁড়িয়েছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞা পরে স্থগিত করে। কিন্তু তার মধ্যেই সর্বনাশ হয়ে যায়। গর্ভপাত চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় বেশিরভাগ ক্লিনিক।

সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *